ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী : খালেদা বিদেশে বসে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছেন

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে রাজনীতিতে পরাজিত ও আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বিদেশের মাটিতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে বিদেশে অবস্থান করে নির্দেশ দিয়ে দেশে গুপ্তহত্যা শুরু করেছেন। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রসহ গুপ্তহত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, যারা গুপ্তহত্যা করছে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। শুধু তাই নয় এদের লিংক, মুরব্বি ও বড় ভাইদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবোই দেবো।
গতকাল সোমবার অপরাহ্নে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় সভাপতির বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে এ জনসভা লাখো জনতার উপস্থিতিতে এক জনসমুদ্রে রূপ নেয়। প্রধানমন্ত্রী বিকেল সোয়া ৩টায় জনসভাস্থলে পৌঁছান। এ সময় হাজার হাজার মানুষ জয় বাংলা ধ্বনি ও তুমুল করতালি দিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানায়। প্রধানমন্ত্রী তার ৩০ মিনিটের ভাষণে সম্প্রতি সংগঠিত দু বিদেশি নাগরিকের হত্যাকাণ্ডসহ মুক্তমনা লেখক, প্রকাশকদের হত্যাকাণ্ডের বিষয় উল্লেখ করে এ সব ঘটনার সাথে বিএনপি-জামায়াত জোটের সম্পৃক্ততার কথা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেন।
দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো মহল বলছে, দেশে আইএস (ইসলামিক স্টেট) ও জঙ্গি-সন্ত্রাসী আছে, জেএমবি আছে। কিন্তু আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এসব জঙ্গি-সন্ত্রাসী যা আছে তা বিএনপি-জামায়াতের মধ্যেই আছে। আমরা শক্তহাতে সন্ত্রাস-জঙ্গি দমন করছি। সন্ত্রাসী যে দলেই হোক, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের স্থান হবে না, হতেও দেবো না। জয় দেশের জনগণেরই হবে, কোনো খুনী-সন্ত্রাসীর হবে না। তিনি বলেন, যখন আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি, রায় কার্যকর হচ্ছে, তখন এ খুনিদের রক্ষার জন্যই এসব গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে। শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সাথে বলেন, আমরা যা বলি তা করি। এদেশের মানুষ স্বাধীনচেতা। ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে কখনোই মাথানত করে না। গুপ্তহত্যা, খুন যা করা হোক না কেন এদেশের মানুষকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। দেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সাধ্য কারো নেই। ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা যারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন, দেশের উন্নতি-শান্তি-প্রগতি চান তারা সকলেই গুপ্তহত্যাকারী খুনিদের খুঁজে বের করতে সরকারকে সহযোগিতা করুন। কোনো অপশক্তিই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। আমরা তা করতেও দেবো না। দেশের উন্নয়নের পথে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বাংলার জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শহীদ জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ছেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, যুব মহিলা লীগের অধ্যাপিকা অপু উকিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ। জনসভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।