ঝিনাইদহ জেলায় “গো খাদ্যের” সংকট গরু পালনে খামারিদের মধ্যে হতাশা

গিয়াস উদ্দীন সেতু: ঝিনাইদহ জেলায় এবার গ্রাম অঞ্চলে “গো খাদ্যের” সংকট দেখা দিয়েছে। যার কারণে বিচুলীর দাম বৃদ্ধি পায়েছে। গরুর খামারীদের গরুর খাবার যোগাড় করতে হিম সিম খেতে হচ্ছে। ঘরে ঘরে গরু পালনে আগ্রহ হারাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষক পরিবার।
সাধারণত “গো খাদ্য” হিসাবে ধানের বিচুলী-খড় গরুর প্রধান খাবার। গতবার আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় কৃষক ধানের বিচুলী করতে না পারার কারণে বিচুলীর দাম বৃদ্ধি হয়েছে। দাম যাই হোক, বিচুলী পাওয়া যাচ্ছে না! যার কারণে গরুর খামারীরা অনেকেই খাদ্যের অভাবে গরু বিক্রয় করে দিচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে গ্রামের মানুষ যারা ১টা ২টা করে গরু পালন করে তারা এবার ঘাসের অভাবে গরু বিক্রয় করছে অনেক কমমূল্যে। জাহাঙ্গীর জানান তার গরুর খাদ্য না থাকায় ৫০ হাজার টাকার গরু ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। শফিউদ্দীন জানান তাদের গরুর খাদ্য নেই, বিক্রি করবে, কিন্তু ৪৫ হাজার টাকার গরু ২৯ হাজার টাকা দাম দিয়ছে। হাটে কোনো ব্যাপারী নেই থাকলেও কেউ ভালো দাম দিতে চায়না। জেলার কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে গরুপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা কম। গরুর ব্যাপারী হ্যাবা জানান বাজার একেবারে ডাউন কারণ গরুর খাদ্য না থাকায় মানুষ গরু কেনা কম করে দিয়েছে। ১০০ টাকার বিচুলী কিনতে হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা তবে এদিন বেশি দিন থাকবে না নতুন ধান উঠলেই বাজার ঠিক হয়ে যাবে। আব্দুল রসুল ব্যাপারী জানান দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে ব্যাপারী আসছে না হাট বাজারে, হাটে যদি বাহিরের ব্যাপারী না আসে তবে বাজারে বেচা-কেনা হয় নাকি? হাটে ব্যাপারী নামলেই গরুর দাম উঠে যাবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, মধুহাটি, সাধুহাটি, সাগান্না ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরুর ঘাস সংগ্রহ করতে সাধুহাটি কৃষি খামারে এসেছে কয়েক শত খামারী, আগাম আমন ধান কেটে ঝেড়ে বিচুলী নিচ্ছে গরুর মালিকরা। এতে করে যেমন সুবিধা হচ্ছে, যারা গরুর ঘাস সংগ্রহ করার জন্য এসেছে, তাদের কারণে খামার কর্তৃপক্ষের শ্রমিকের খরচ বেচে যাচ্ছে। কিন্তু যারা নিয়মিত খামারে কাজ করত তারা বেকার হয়ে গেলো। শ্রমিকরা মনের কষ্টে বলছে আমাদের রিজিক মেরে দেয়াটা স্যারের ঠিক হচ্ছে না। রাঙ্গীয়ার পোতা গ্রামের গরু খামারী সোহেল রানা টিটু জানান এবার খামারীদের ব্যাপক লোকসান হবে, কারণ গরুর খাবারের খরচ অনেক বেশি হয়েছে।