চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মর্তূজাকে সপরিবারে হত্যার হুমকি এবং

সরষের মধ্যেই ভূত! চিঠি দেয়ার সময় হুমকিদাতা তিনজন হাতে নাতে পাকড়াও

 

জীবননগর ব্যুরো: খোদ সরষের মধ্যেই ভূত! নিজে যাদের প্রাণ রক্ষার জন্য রাতভর বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন, তিনিই আবার পাহারার ভেতরেই তাদেরকে সপরিবারের হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দিচ্ছেন। আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার মিনাজপুর গ্রামে।

জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তূজাকে সপরিবারে হত্যার হুমকি দিয়ে গত ২৩ অক্টোবর মিনাজপুরের বাড়িতে চিঠি দেয় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদল। এরপর একাধিক চিঠি দিয়ে গত ৯ নভেম্বর সপরিবারে হত্যার উদ্দেশে কেরোসিন দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা করে অজ্ঞাত ওই দুর্বৃত্তদল। এ ঘটনার পর গত ১০ নভেম্বর থেকে ৪ পুলিশসহ গ্রামবাসী রাত-দিন পালাক্রমে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ি পাহারা দিয়ে আসছে। কড়া এ প্রহরার মধ্যেও উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তূজা একের পর এক তাকেসহ পরিবারের সকল সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যার হুমকি সম্বলিত চিঠি পেয়ে আসছিলেন। তাতে লেখা ছিলো পাহারা দিয়েও তোদেরকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। কড়া এ পাহারার মধ্যে এ ধরনের চিঠি পাওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার পরিবারসহ পুলিশ প্রশাসন ও গ্রামবাসী ছিলো চরম উদ্বিগ্ন।

গত শুক্রবার রাতে নিয়মিত পাহারা চলাকালে পুলিশ দেখতে পায় পাহারারত গ্রামবাসীর একটি দলের মধ্য থেকে একজন সঙ্গোপনে চেয়ারম্যানের বাড়ির দিকে এগিয়ে গেলো এবং গ্রিলের ফাঁক দিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়ির বারান্দায় কিছু একটা ছুঁড়ে মেরে দ্রুতপায়ে ফিরে আসছে। পুলিশের সন্দেহ হলে এ সময় তারা ছুটে এসে পাহারা দলের টিমলিডার আশরাফুজ্জামান লিটনকে (৪৫) হাতেনাতে আটক ও বারান্দা থেকে হত্যার হুমকি দেয়া চিঠি উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ সে অকপটে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সে পুলিশকে জানায়, সেসহ ৪জন এ ঘটনার সাথে জড়িত। লিটনের স্বীকারোক্তিতে পুলিশ তার অপর দু সহযোগী একই গ্রামের সাধন হোসেন (২৩) ও সাইফুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেফতার করে। এ সময় চিঠি লেখার মূলনায়ক ছাত্রশিবির ক্যাডার সাত্তার পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত লিটন জানায়, সে সম্পর্কে উপজেলা চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই এবং নিজে চেয়ারম্যানের বাড়ি পাহারা দেয়া দলের একটি টিমলিডার হওয়ায় কড়া পাহারার মধ্যেও চিঠি দেয়া তার জন্য খুবই সহজ ব্যাপার ছিলো।

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আওয়ামী লীগের এ নেতাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখা হচ্ছিলো বলে এলাকাবাসীর ধারণা। গ্রেফতারকৃত সকলেই জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মী বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়েছে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে থানায় মামলা না হওয়ায় ওসি শিকদার মশিউর রহমান গ্রেফতারকৃতদের ছবি দিতে রাজি হননি।