গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের মুখোমুখি চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী

২৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বিবরণ তুলে ধরে সহযোগিতা চাইলেন সকলের
স্টাফ রিপোর্টার: গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের মুখোমুখি হয়ে ২৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বিবরণ তুলে ধরলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু। গতকাল রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মুখোমুখি অনুষ্ঠানে ৯টি ওয়ার্ডের রাস্তা-ঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণের ঘোষণা দেন চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী। যা কাল মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হবে। এছাড়াও পৌর এলাকায় নিরাপদ পানির পাম্প স্থাপন, শিশু পার্ক স্থাপন, আধুনিক অডিটোরিয়াম ও পৌর মার্কেট নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি। এ সময় গণমাধ্যমকর্মী, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আইনজীবী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র (১) একরামুল হক মুক্তা, প্যানেল মেয়র (২) রেজাউল করিম খোকন ও প্যানেল মেয়র (৩) শাহিনা আক্তার রুবি, সংরক্ষিত কাউন্সিলর সুলতানা আরা বেগম ও শেফালি খাতুন, কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম, নাজমুস সালেহীন লিটন, জাহাঙ্গীর আলম মালিক, গোলাম মস্তফা শেখ মাস্তার, রাসেদুল হাসান মানু, আবুল হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম মনি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পৌরসভার সচিব কাজী শরিফুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী আয়ুব আলী বিশ্বাস ও সহকারী প্রকৌশলী কাওসার আলীসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
জনপ্রতিনিধিদের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ আলী বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ নেতা আলী আহমেদ ও অ্যাড. শফিকুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. কামরুজ্জামান, পৌর কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী বিশ্বাস, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান ও সহসভাপতি অধ্যাপক এসএস ই¯্রাফিল, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মালিক, জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হোসেন লেমন ও সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার, সাংবাদিক, ছাত্র-ছাত্রীরা এ সময় নাগরিক বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ আলী বিশ্বাস বলেন, পৌরসভার উন্নয়ন কাজ মেয়রের একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। প্রকৌশলীদেরও একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করতে হবে। সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনে মেয়রের নেতৃত্বে তার কাজ তাকেই বাঁচিয়ে রাখবে।
চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় উন্নয়নে যে টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তার অবদান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি না চাইলে টাকা পেতাম না। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাকে মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আপনাদের দোয়া আমাদের সাথে আছে। চুয়াডাঙ্গাকে বসবাসের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলবো। পৌর নাগরিকদের পরামর্শ পৌর পরিষদ কাজে লাগিয়ে ভালো কাজের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো। চলার পথে ভূল হতে পারে। আপনারা পরামর্শ দেবেন তা সংশোধন করে নেবো। পৌরসভার উন্নয়নে সচ্ছতা রাখতে চাই। আগামী দিনে উন্নয়নের যে কাজ হবে কাউন্সিলররা তদারকির কাজ করবেন। পৌরবাসী দায়িত্ব নিয়ে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা আমাদেরকে জানাবেন। যে অভিযোগগুলো শুনলাম তা সব সমাধান করতে পারবো না। তবে বেশির ভাগই সমাধান করতে পারবো। চলমান প্রকল্পের ১ম ফেজে ১২ কোটি ৮৪ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৫ টাকার ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়া এডিপির টাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে।
এ সময় পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাকে একটি মডেল আধুনিক ও ডিজিটালাইজড পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে আরও ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- পৌর পশহাট পুনরায় চালু, আধুনিক পৌর ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, আধুনিক অডিটোরিয়াম ও পৌর মার্কেট নির্মাণ, আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, নিচের বাজারে পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ, পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নির্ধারিত জায়গা ও শোধনাগার নির্মাণ, শহরের প্রবেশদ্বারগুলোতে সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য নান্দনিক গেট নির্মাণ, জলাবায়ু প্রকল্পের আওতায় পৌর এলাকায় ১ কোটি টাকার সোলার পোল স্থাপন, জাইকার অর্থায়নে পৌর এলাকার হাজরাহাটিতে পানির পাম্প স্থাপন, বিনোদনের জন্য শিশু পার্ক স্থাপন ও সকল নাগরিক সেবা অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবস্থাকরণ।