এবার তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদ : ঘোষণা দিলেন যৌথভাবে

 

স্টাফ রিপোর্টার: তাহসানের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাহসান ও মিথিলা যৌথভাবে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। সাবেক এই দম্পতির বিচ্ছেদের বিষয়টি তাদের অনেক ভক্তই সহজভাবে মেনে নিতে পারছেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এ বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।

অনলাইনে এই তারকা জুটির বিচ্ছেদের ঘোষণা পাওয়ার পর থেকে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে তারা কেউ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। অনেক চেষ্টার পর তাহসান ও মিথিলার সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। প্রথম আলোর সঙ্গে ফোনালাপে মিথিলা জানান, প্রায় দুই বছর ধরেই তাহসান ও তিনি আলাদাভাবে থেকে আসছিলেন। আলাদা থেকে তারা নিজেদের মধ্যকার সমস্যাগুলো মিটমাটের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া না হওয়ায় চূড়ান্ত বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এই বছরের মে মাসে তাহসান-মিথিলার প্রায় ১১ বছরের সংসারের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয়েছে। এ ঘটনাটি সবাইকে জানানোর জন্য তারা দুজনই আরেকটু সময় নিতে চেয়েছিলেন। কারণ, এতো বড় কষ্টের খবর সবাইকে জানানোর মতো মানসিক প্রস্তুতি তাদেরও ছিলো না বলে জানান মিথিলা। কিন্তু কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল মনগড়া ও আজেবাজে খবর প্রকাশ করায় তারা ফেসবুকে যৌথভাবে তাঁদের বিচ্ছেদের কথা আজ প্রকাশ করেছেন। বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে মিথিলা বলেন, ‘একটি ইস্যু নিয়ে তো আর কখনো বিচ্ছেদ হয় না। বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে একজন মেয়ের জন্য বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়াটা এতো সহজ নয়। কিন্তু একটা সময় আমাকে মেনে নিতে হয়েছে এটাই বাস্তবতা। জীবনচলার পথের একটা সময় এসে আমরা বুঝতে পারলাম, দুজন মানুষ যার যার জায়গা থেকে দুই ধরনের জিনিস চাই। তাহসানের জীবনের লক্ষ্য হয়তো একরকম, আমার হয়তো আরেক রকম। তবু দুজন ভিন্ন রকম মানুষ তো একসঙ্গে থাকে। আমরাও থেকেছি। শেষ পর্যন্ত আর হলো না। আমাদের যখন বিয়ে হয়, তখন আমাদের দুজনের বয়সই অনেক কম। আমাদের ক্যারিয়ারও একসাথে গড়ে উঠেছে। এমন না যে, কেউ কারও আগে বা পরে এসেছি। সেসব দিক থেকে আমাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা ছিলো না। কিন্তু একটা সময় এসে মনে হচ্ছিলো, ১১ বছর আগের একজন মানুষ আর পরের একজন এক থাকে না। অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। তাই বিচ্ছেদের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতে হয়েছে।’ বিচ্ছেদের কারণ প্রসঙ্গে তাহসান শুধু এটাই বললেন, ‘সমাজ কী বলবে-এই ভয়ে অভিনয় করে সারা জীবন কাটিয়ে দিতে হবে, আমরা দুজন এ ব্যাপারে একমত নই।’ ফেসবুকে আজ দুপুরে তারা লেখেন, ‘অতি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে। কয়েক মাস ধরেই আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। অবশেষে কোনো চাপে না থেকে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা জানি, আমাদের এ সিদ্ধান্তে অনেকে ব্যথিত হবেন। সে জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’ সংগীত ও অভিনয়শিল্পী তাহসান ও মিথিলা সেখানে বলেন, কঠিন সময়ে ভক্তরা তাদের সাথে থাকবেন বলেই তারা বিশ্বাস করেন। তাহসান ও মিথিলা ২০০৬ সালে ৩ আগস্ট বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। আইরা তেহরীম খান তাহসান-মিথিলা দম্পতির একমাত্র সন্তান। তাহসান মিথিলার পরিচয় গানের মাধ্যমে। তাহসান তখন ব্ল্যাক ব্যান্ডের গায়ক। এক বন্ধুর সাথে তাহসানের আড্ডায় গান শুনতে যান মিথিলা। এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক পরিণয়ে গড়ায়। বিয়ের পর এ জুটি একাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। ‘আমার গল্পে তুমি’, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস’, ‘ল্যান্ডফোনের দিনগুলোতে প্রেম’, ‘মধুরেন সমাপয়েত’ নাটকসহ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন এই জুটি। নাটক ছাড়াও এ জুটি একসাথে গানও গেয়েছেন।

তবে তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত তাদের সন্তানকেই সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা দিবে বলে মন্তব্য এই জুটির ভক্তদের। শরিফ শরিফুল ইসলাম নামের একজন লিখেছেন, ওদের না, ওদের মেয়েটার জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেলো। টেনশনের বয় সোহাগ লিখেছেন, এটা আমি মানি না। তোমাদের বাবু মনির কথা ভাব, তাহলে তোমাদের মাথা থেকে শয়তান চলে যাবে। এদিকে তাহসান-মিথিলা দম্পতির ভালোবাসা, প্রেম আর সংসার জীবন নিয়ে মিডিয়াতে বেশ আলোচনা হয়েছে। ভক্তদের অনেকেই এই দম্পতিকে আইডল মানেন। তবে বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনায় সবাই বিরূপ মন্তব্য করেছেন। শেখ মোস্তফা লিখেছেন, মডেলদের কাছে ডিভোর্স হওয়াটা আধুনিক ফ্যাশানের মতো। হাসানুল ইসলাম লিখেছেন, বিবাহ হচ্ছে এদের কাছে একটা আর্ট। এদের পরে আবার বিয়ে হবে, ওদেরই কলাকুশলীদের সাথে। এটাও একটা হাইলাইট। শিল্পী বলে কথা। মাহবুব আলম লিখেছেন, এদেরকে নিয়ে আমরা পাগল প্রায়। এদেরকে নিয়ে মাতামাতি অনেক। ছেলেমেয়েরা এদেরকে অনুসরন অনুকরণ করে। তবে এদের কাছ থেকে কি শিখছি,  এরা সমাজকে কি বার্তা দিচ্ছে? আজকের ছেলেমেয়েদের বলি যাদের অনুকরণ করলে ভালো চরিত্র গঠণে সহায়তা হবে তাদের অনুকরণ করি।