৬ গরুব্যবসায়ী অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়ে খুইয়েছেন ৪ লাখ টাকা

নোয়াখালী থেকে আলমডাঙ্গা পশুহাটে হোটেলে খেতে বসে প্রতারকচক্রের কবলে!

আলমাডাঙ্গা ব্যুরো: নোয়াখালীর রসুলপুরের ৬ গরুব্যবসায়ী আলমডাঙ্গা পশুহাটের বাবুর হোটেলে খেতে গিয়ে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৪ লাখ টাকা খুইয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে হোটেল মালিক পরিকল্পিতভাবে মাংসের সাথে কিছু খাওয়ায়ে অজ্ঞান করে তাদের নিকট থেকে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অজ্ঞান অবস্থায় ৫ গরুব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।

জানা গেছে, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর গ্রামের ৫-৬ জন গরুব্যবসায়ী গতকাল বুধবার গরু কিনতে আলমডাঙ্গা গোহাটে আসেন। বেলা ১১টার দিকে তারা আলমডাঙ্গায় পৌঁছান। তাদের নিকটে মোট ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা ছিলো। আলমডাঙ্গা পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর তারা গরুহাটে প্রবেশ করেন। ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় তারা দুটি গরু কেনেন। বেলা ২টার দিকে রাখালসহ তারা ৫ জন প্রথমে গোহাটের বাবুর হোটেলে ঢোকেন খাওয়ার জন্য। তারা মাংস ও ডাল দিয়ে ভাত খান। এদের মধ্যে রাখাল রেজাউল একটু আগে খেতে বসে। সে দ্রুত খেয়ে গোহাটে ফিরে গিয়ে আশাদুল নামের তাদের আরেকজনকে খেতে ওই হোটেলে পাঠায়। আশাদুল গিয়ে দেখেন তাদের যারা আগে গিয়েছিলেন খেতে, তাদের সবাই বেহুশ হয়ে পড়ে রয়েছেন। তিনি রাখালকে সংবাদ দিলে রাখালও দ্রুত ওই হোটেলে ছুটে যান। তাদের প্রত্যেকের পকেট হাতড়ে দুজন মিলে মোট ৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা উদ্ধার করে। খোয়া যায় প্রায় ৪ লাখ টাকা। পরে হাটমালিক পক্ষের সহযোগিতায় ওই অসুস্থ ৫ গরুব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইউনাইটেড ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- নোয়াখালীর বেগমপুর উপজেলার রসুলপুরের মৃত হাফেজ রুহুল আমিনের ২ ছেলে শফিউল্লাহ লাটু (৫৮) ও আনোয়ার হোসেন (৪০), মৃত সিরাজুল ব্যাপারীর ছেলে নূর ইসলাম (৪২), একই উপজেলার লতিফপুরের ফারুক হোসেন (৪০) ও রফিকপুরের আব্দুল খালেকের ছেলে  সেনা সদস্য (অব.) তাজুল ইসলাম (৪৩)। ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. বিডি দাস বলেন, তারা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে ১০-১২ ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

যে হোটেলে খেতে গিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ৫ গরুব্যবসায়ী ৪ লাখ টাকা খুইয়েছেন, সেই হোটেল মালিক আলমডাঙ্গা মিয়াপাড়ায় বসবাসরত মৃত নূর ইসলামের ছেলে বাবু অজ্ঞান করে ৫ গরুব্যবসায়ীর নিকট থেকে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন কেউ কি তার হোটেলের বদনাম চায়? ইতঃপূর্বেও তার হোটেলে অজ্ঞান করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছিলো। বার বার কেন তার হোটেলে খেতে গিয়েই ব্যবসায়ীরা অজ্ঞান হয়ে থাকেন? এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আকরাম হোসেন বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। অসুস্থ গরুব্যবসায়ীরা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না। তারা সুস্থ হলেই লিখিত অভিযোগ নেয়া হবে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় জড়িত চক্রকে খুঁজে বের করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।