৫ মাস থাইল্যান্ডে কারারুদ্ধ আলমডাঙ্গা ভাংবাড়িয়ার ১০ যুবক

পুলিশের তথ্য সংগ্রহ : ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দুজনের গাঢাকা

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়া গ্রামের ১০ যুবক গত ৫ মাস যাবত থাইল্যান্ডের জেলে বন্দি। একই গ্রামের সবা ও এনামুল তাদেরকে ফুঁসলিয়ে পানিপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীরা বলেছে, তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সম্প্রতি থাইল্যান্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়। এজন্য তারা বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিকট কারারুদ্ধ ১০ যুবক সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে পাঠালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা সংগ্রহের জন্য আলমডাঙ্গা থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেয়। ১০ জনের নিকট থেকে ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অভিযুক্ত ২ প্রতারক গাঢাকা দিয়েছে ।

জানা গেছে, ৫/৬ মাস আগে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের ২ প্রতারক একই গ্রামের ১০ যুবককে ফুঁসলিয়ে পানিপথে মালয়েশিয়া পাঠায়। এরা হলো ভাংবাড়িয়া গ্রামের মহাবুলের ছেলে হাকিম আলী, অপূর্বের ছেলে আশিক, নবি মণ্ডলের ছেলে ফকির, হেলা মণ্ডলের ছেলে রফিকুল ইসলাম, ইয়ামিন আলীর ছেলে সুমন আলী, হেলালের ছেলে আমিরুল ইসলাম, তাহাজ্জেত আলীর ছেলে বল্টু, মল্লিকের ছেলে বকুল, রেজাউল হকের ছেলে আশাবুল ইসলাম ও লিয়াকত আলীর ছেলে টিপু সুলতান। এরা বর্তমানে সকলেই থাইল্যান্ডের জেলহাজতে বন্দি রয়েছে।

থাইল্যান্ডে জেলাহাজতে বন্দিদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর জন্য ওই যুবকরা গত ৫/৬ মাস আগে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে বাড়ি ছাড়ে। কিন্তু দালালরা প্রতারণা করে তাদেরকে পানিপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের হাতে তুলে দেয়। পরে থাইল্যান্ড পুলিশের হাতে ধরা পড়ে প্রায় ৫ মাস ধরে কারারুদ্ধ রয়েছে। থাইল্যান্ডে কারাবন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সম্প্রতি বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি মোতাবেক থাইল্যান্ডের জেলে আটক বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য তথ্য সংগ্রহ করেছে সে দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সে তথ্য সঠিক কি-না তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিকট তথ্য চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গতকাল আলমডাঙ্গা থানা পুলিশকে থাইল্যান্ডের জেলে বন্দিদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য বলা হয়।

ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্য জানান, তাদের গ্রামের ২ প্রতারক পেছনে লেগে থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতো ওই ১০ যুবককে। ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়াই মালয়েশিয়ায় যাওয়া যাবে বলেও আশ্বস্ত করতো। এজন্য জন প্রতি ২ লাখ ২০ হাজার করে টাকা দিতে হবে। এমনকি এ টাকা নগদ দিতে হবে না। পরে কাজ করে পরিশোধ করতে হবে বলে জানায়। এরই এক পর্যায়ে তারা রাজি হয় মালেশিয়ায় যেতে। প্রায় ৫/৬ মাস আগে ওই ১০ যুবককে পানিপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার জন্য জাহাজে তুলে দেয় প্রতারকরা। এরপর মোবাইলফোনে টাকা পরিশোধের জন্য ওই ১০ যুবকের পরিবারে ওপর চাপ প্রয়োগ করে প্রতারকরা। ওই ১০ যুবককে দিয়ে মোবাইলফোনে তাদের পরিবারের নিকট টাকা পরিশোধ করতে বলে। ১০ যুবকের পরিবারের নিকট থেকে মোট ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক সবা ও এনামুল।

বর্তমানে ওই দু প্রতারক পলাতক রয়েছে। প্রতারকদের সাথে কথা বলার জন্য তাদের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। প্রতারকদের পরিবারের কাছে মোবাইলফোন নম্বর চাইলেও দেয়া হয়নি।