৫ জানুয়ারি কালো পতাকা মিছিল ও শোডাউনের প্রস্তুতি

 

স্টাফ রিপোর্টার: সরকারের প্রতি গণঅনাস্থা জানাতে আগামী ৫ জানুয়ারিকে টার্গেট করে কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। ৫ জানুয়ারিকে কালো দিবস আখ্যা দিয়ে এ দিন দেশব্যাপি কালো পতাকা মিছিল ও রাজপথে শোডাউন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। আর এ মিছিলের মাধ্যমেই শুরু হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রথম ধাপ। যা ক্রমেই আরো কঠোর আন্দোলনের রূপ নেবে। কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে ক্ষমতাসীদের প্রতি গণঅনাস্থায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সূত্রটি জানায়, কালো পতাকা মিছিলে সরকার ও তার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাধা দিলে ৬ ও ৭ জানুয়ারি দেশব্যাপি হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে দলের আরেকটি সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে শিগগিরই ক্ষমতাসীনদের শেষ আল্টিমেটাম দিতে ঢাকায় একটি সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। আর সে জন্য দলের পক্ষ থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বরাবর সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হবে। তবে এবার ডিএমপি’র অনুমতির জন্য অপেক্ষায় না থেকে যে কোনো মূল্যে কর্মসূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে বিএনপি। এদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের চূড়ান্ত  আন্দোলনের আভাস দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল জানান, জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকতে পারবে না সরকার। শিগগিরই সরকার পতনে লাগাতার কঠোর কর্মসূচি দেবে ২০ দল। অন্যদিকে আগামী ৫ জানুয়ারির কর্মসূচিকে সফল করতে ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলের স্থায়ী কমিটি, সহ-সভাপতি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদকম-লীর সদস্য, ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, দল সমর্থিত চিকিৎসক সংগঠন, প্রকৌশলী, শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেছেন। বিএনপি চেয়ারপাসনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোর একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়া ৫ জানুয়ারির কর্মসূচিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। তিনি আগামী ৫ জানুয়ারিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সকলকে রাজপথে নামার নির্দেশনা দেন। সেখানে খালেদা জিয়া বলেন, দেশ আজ ক্ষমতাসীনদের হাতে জিম্মি। এ থেকে উত্তোরণে সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সরকার পতনের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে আহবান জানান তিনি।

বিএনপি কেন্দ্রীয় দফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি ডিসেম্বর মাসকে সাংগঠনিক মাস ঘোষণা দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে দলটি। যার ধারবাহিকতায় ইতিমধ্যে দেশের ১০টি জেলায় সাংগঠনিক সফর করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। এ মাসে আরো কয়েকটি জেলা সফর করার কথা রয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৩ ডিসেম্বর রাজধানীর নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে জেলা ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সভায় অংশ নেবেন বেগম খালেদা জিয়া। এছাড়া চলতি মাসের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য কনভেনশন এবং ২১ ডিসেম্বর জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের আয়োজন করেছে। এসব অনুষ্ঠানেও প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।