৪ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে পালিয়েছে ৩ জন ॥ মলমপার্টির একজনকে ধরে পিটুনি

চুয়াডাঙ্গা থেকে বাসযোগে শিয়ালমারী পশুহাটে যাওয়ার সময় প্রতারক চক্রের খপ্পরে গরু ব্যবসায়ী

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা থেকে বাসযোগে জীবননগর শিয়ালমারী পশুহাটে যাওয়ার সময় বেল্টু (৩২) নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে অজ্ঞান করে ৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়েছে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। টাকা হানিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় লিটন (২৮) নামের অজ্ঞান পাটির এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তাকে গণধোলায় শেষে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গরু ব্যবসায়ী বেল্টুর বড়ভাই মমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত খোয়া যাওয়া ওই টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ব্যবসায়ী বেল্টুকে উদ্ধার শেষে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। আটক অজ্ঞান পাটির সদস্য লিটন যশোর কোতুয়ালী থানার চাচড়া গ্রামের মালেক মুন্সির ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দামুড়হুদার কোষাঘাটা মাঠের মধ্য থেকে তাকে তাড়িয়ে ধরা হয়।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার অনুপনগর গ্রামের ই¯্রাফিল বিশ্বাস ওরফে ফকির চাঁদের তিন ছেলে গরু ব্যবসায়ী মমিনুল ইসলাম (৩৫), সেজ ছেলে বেল্টু (৩২) এবং ছোট ছেলে রিন্টু গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জীবননগরস্থ শিয়ালমারী পশুহাটে গরু কেনার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। আলমডাঙ্গা থেকে অটোযোগে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছুনোর পর বেলা ১টার দিকে বাসযোগে শিয়ালমারী পশুহাটের উদ্দেশে রওনা হয় তারা। তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়ভাই মমিন ও সেজভাই বেল্টু বাসের মধ্যে পাশাপাশি ছিটে বসে এবং ছোটভাই রেন্টু উঠে বাসের ছাদে। চুয়াডাঙ্গা থেকেই তাদের পিছু নেয় অজ্ঞান পাটির ৪ সদস্য। চুয়াডাঙ্গা থেকে ওই অজ্ঞানপার্টির ৪ সদস্যও ওঠে একই বাসে। চুয়াডাঙ্গা থেকে দামুড়হুদা পৌঁছুনোর আগেই অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বেল্টুকে কৌশলে অচেতন করে এবং তার কাছে থাকা ৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। বাসটি দামুড়হুদা বাসষ্ট্যান্ডে পৌঁছুলে অজ্ঞান পাটির ওই ৪ সদস্য বাস থেকে নেমে পড়ে এবং ইজিবাইকযোগে চুয়াডাঙ্গা অভিমুখে সটকে পড়ার চেষ্টা করে। দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ছাড়ার পরপরই বাসের সুপারভাইজার গরু ব্যাবসায়ী মমিনুলের কাছে ভাড়া চান। মমিন এ সময় তার ভাইকে দেখিয়ে দিয়ে বলে ও ভাড়া দেবে। সুপারভাইজার বেল্টুর গায়ে হাত দিয়ে ভাড়া চাওয়ার সাথে সাথে ঢলে পড়ে। এ সময় বড় ভাই মমিনুল তাকে থড়িঘড়ি বাস তেকে নামিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন এবং সিএনজিযোগে ওই অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরতে পিছু ধাওয়া করেন। মমিনুল সিএনজিযোগে দামুড়হুদার কোষাঘাটাস্থ ইটভাটার সামনে অটোর গতিরোধ করলে অজ্ঞান পাটির সদস্যরা ইজিবাইক থেকে নেমে মাঠের মধ্যদিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। গরু ব্যাবসায়ী মমিনুল স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অজ্ঞান পার্টির ৪ সদস্যের মধ্যে লিটন নামের একজনকে তাড়িয়ে ধরে গণধোলায় দেয়। গরু ব্যবসায়ী মমিনুল জানান, অজ্ঞান পার্টির ৪ সদস্যের মধ্যে একজনকে ধরতে পারলেও তার কাছে টাকা ছিলো না। অপর ৩ জন ওই টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাদেরকে আর ধরতে পারিনি। দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লিটনকে থানায় নিয়ে আসে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, এ ঘটনায় আটক লিটনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। খোয়া যাওয়া টাকাসহ পলাতক আসামিদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।