৩ দিনের জেল হলেও দীর্ঘ ২ বছর ২ মাস ২০ দিন কারাভোগ শেষে ভারতে ফিরলেন আব্দুল আনসারি

দর্শনা অফিস: তিন দিনের জেল হলেও কারাভোগ করতে হয়েছে দীর্ঘ ২ বছর ২ মাস ২০ দিন। অবশেষে আপন ঠিকানায় ফিরলেন ভারতীয় নাগরিক আব্দুল আনসারি। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দর্শনা আইসিপি চেকপোস্ট সীমান্তে এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনসারিকে দেশে ফেরত দেয় বিজিবি ও দর্শনা ইমগ্রেশন পুলিশ। দীর্ঘদিন পর মাকে পেয়ে আনসারি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।

জানা গেছে, বিনা পাসপোর্টে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার বাগমারী গ্রামে আত্মীয়র বাড়িতে এসেছিলেন ভারতের মালদা জেলার গাজল থানার পাণ্ডুয়া গ্রামের বাসিন্দা আজুল আনসারির ছেলে আব্দুল আনসারি (৪৮)। দিনটি ছিলো ২০১৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। আসার সময় চিলমারী সীমান্তে বিজিবির হাতে ধরা পড়ে। অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে জেলে যেতে হয় তাকে। আদালত তাকে তিনদিনের কারাদণ্ডাদেশ দেন। আইনি জটিলতার কারণে সেই থেকে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারেই দিন কাটছিলো আনসারির। তিন দিনের কারাদণ্ডাদেশ যেন ২ বছর ২ মাস ২০ দিনেও শেষ হচ্ছিলো না।

অবশেষে গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দর্শনা আইসিপি চেকপোস্ট সীমান্তে এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আব্দুল আনসারিকে দেশে ফেরত দেয় বিজিবি ও দর্শনা ইমগ্রেশন পুলিশ। ছেলেকে নিতে আসে তার মা বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বৃদ্ধা ময়মুনা বেবা। দীর্ঘদিন পর নাড়ি ছেঁড়া ধনকে ছেলেকে ফিরে পেয়ে বৃদ্ধা ময়মুনা বেবা বুকে জড়িয়ে ধরে দর্শনা সীমান্তে আবেগের কান্নায় বুক ভাসান। কাদেন ছেলে আব্দুল আনসারিও।

ময়মুনা বেবা এ সময় জানান, ছেলেকে দেখতে ৮ বার গিয়েছি কুষ্টিয়া জেলে। আর ফেরত পেতে ৫ বার এসেছি গেদে সীমান্তে। অবশেষে আল্লাহর রহমতে আজ আমার বুকের ধনকে ফিরে পেয়েছি। দেশে ফেরার জন্য কুষ্টিয়া কারাগার থেকে এর আগে দু দফায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তের জয়নগর চেকপোস্টে এসেও সীমান্তের হস্তান্তর প্রক্রিয়ার জটিলতার কারণে আবারও কারাগারে ফেরত যেতে হয় আনসারিকে। পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিজিবির দর্শনা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার রবিউল ইসলাম, দর্শনা চেকপোস্ট ইমগ্রেশন অফিসার রাশেদুজ্জামান, বিএসএফ’র গেদে ক্যাম্পের ইনচার্জ জেএস চিব, ইমিগ্রেশন অফিসার বিজেশ যাদব ও মালদা থানার পুলিশ অফিসার জীবন সিং।