৩৫ ভ্রমণকারীসহ পাকশীর পদ্মায় নৌকাডুবি

স্টাফ রিপোর্টার: ঈশ্বরদীর পাকশীতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে নৌকা ভ্রমণে বের হওয়া অন্তত ৩৫ জনকে বহনকারী একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্য থেকে ১১ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনও কমপক্ষে ২৪ জন নিখোঁজ রয়েছে। তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে উদ্ধারকারী দল। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পদ্মা নদীর পাকশী প্রান্তের লালনশাহ সেতু ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশ, দমকল বাহিনী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে পাবনার আটঘরিয়ার কবির হোসেনের ছেলে জিল্লুর রহমানকে (২৪) ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্থানান্তর করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া নৌকার মাঝি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এলাকার লিটনকে উদ্ধার করে পাকশী ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী মিজানুর রহমান জানান, রাত সাড়ে ৮টায় পদ্মা নদী থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া ১১ জনের মধ্যে সোনালি, রনি ও হিরা নামে ৩ শিশু রয়েছে। ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ বিমান কুমার দাশ জানান, পাবনা ও নাটোর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিশুসহ অন্তত ৩৫ জন নারী-পুরুষ একটি নৌকায় ঈশ্বরদীর পদ্মা নদীতে আনন্দ ভ্রমণে বের হয়। নৌকাটি পদ্মা নদীর পাকশী প্রান্তে লালনশাহ সেতু ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থানে এলে একটি ডুবোচরে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এ ঘটনায় ৩৫ জন যাত্রীর মধ্যে বিভিন্ন ভাবে ১১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাজশাহী থেকে আনা ডুবুরি নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। শনিবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নিখোঁজ হওয়া ২৪ ভ্রমণকারীর কোনো সন্ধান মেলেনি।

রাজশাহী অঞ্চলের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি নুরুন্নবী শুক্রবার রাত ১১টায় উদ্ধার কাজ শুরু করেন। নদীতে প্রবল স্রোত থাকার কারণে কয়েক দফা উদ্ধার তৎপরতা চালাতে ব্যর্থ হন। নদীর নিচে অন্ধকার থাকার কারণে কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না বলেও তিনি জানান। নৌকাডুবিতে স্বজন হারাদের বেশ কয়েকজনকে নদীর পাড়ে বিলাপ করতে দেখা গেছে। তারা জীবিত কিংবা লাশের অপেক্ষায় ১৮ ঘণ্টা ধরে নদীর দিকে তাকিয়ে আছেন। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বলেন, নৌকাডুবির কথা শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং রাজশাহী থেকে ডুবুরি দল এনে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। নিখোঁজদের লাশ কোথাও পাওয়া গেলে তা পুলিশ দিয়ে উদ্ধার করে এনে স্বজনদের কাছে পৌঁছানো হবে। ডিগ্রির চরে লাশ ভেসে উঠেছে এমন সংবাদের পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ডুবুরি দলকে উদ্ধার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাকশী নদীর পাড়ে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।