২৭ মে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরছেন অবৈধ অভিবাসীরা

স্টাফ রিপোর্টার: অবৈধভাবে থাইল্যান্ডে থাকা ৬০ জন বাংলাদেশিকে শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বর্তমানে তারা দেশটির রাজধানী ব্যাংককে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে ১৩ জনকে আগামী ২৭ মে এবং ১৭ জনকে ১ জুন দেশে ফেরত পাঠানো হবে। থাই সরকারের সহযোগিতায় বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম জানান, গত এক বছরে ১২১৮ জন বাংলাদেশিকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৯৯ জনকে দেশে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের মধ্য থেকে ৬০ জনকে শিগগিরই দেশে পাঠানো হচ্ছে। এখনো যারা আছেন তাদেরকে থাই সরকার যথেষ্ট সহযোগিতা করছে। অচিরেই তাদেরকেও দেশে পাঠানো হবে।

দেশে ফিরছেন যেসব বাংলাদেশি: ৬০ জন বাংলাদেশির মধ্যে ২৭ মে সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ বিমানের ০৮৯ ফ্লাইটে ১৩ জন ফিরবেন। কক্সবাজার সদরের নুরুল আলম, মহেশখালীর জাহাঙ্গীর হোসেন, ফজল করীম, রামুর আবু সাঈদ, টেকনাফের সাব্বির আহমেদ, নুরুল আমীন, শফিক, মো: নুরু, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মো. ইয়াকুব, মাগুরা সদরের মোহাম্মদ সানারউদ্দিন, নরসিংদীর শিবপুরের মো. খোকন, বগুড়া সদরের নুর হাসান ও শিবগঞ্জের আতিকুর রহমান। এরপর ১ জুন বাংলাদেশ বিমানে দেশে ফিরবেন আরো ১৭ জন। এরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের জসিমউদ্দিন, কিশোরগঞ্জ বাজিতপুরের রুবেল, মো. রায়হান, সুনামগঞ্জ দুয়ারারবাজারের মো. জোবেল মিয়া, পাবনার সুজানগরের মো. শিপন, যশোরের চৌগাচার মুক্তার, মোশাররফ, টিটু রহমান, আবু মোছা, মুসলিম, উজ্জ্বল হোসেন, সাতক্ষীরার তালার বাবু, ধানদিয়া ইউনিয়নের মো. সবুজ, কুষ্টিয়া মিরপুরের লালমিয়া, নরসিংদীর রায়পুরার মুক্তার হোসেন, শিবপুরের শাহিন ও হবিগঞ্জ বানিয়াচংয়ের আলমগীর।

বাংলাদেশ দূতাবাসের কনসুলার মোহাম্মদ এহতেশামুল হক বলেন, বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে যারা আছেন তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। দেশে ফেরত না পাঠানো পর্যন্ত সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে থাই সরকারও। এমনকি যারা আর্থিকভাবে দুরবস্থায় আছে তাদেরকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম আর্থিক সহযোগিতাও দিচ্ছে। দূতাবাস থেকে পাঠানো বাংলাদেশি শনাক্তকরণ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা গেলে বাকিদের সহসাই দেশে পাঠানো সম্ভব বলে জানান তিনি।

মানবপাচার নিয়ে সাম্প্রতিক সঙ্কট উত্তরণের পথ খুঁজতে কুয়ালালামপুরে ত্রিদেশীয় বৈঠক শুরুর আগেই বুধবার সকালে ইন্দোনেশীয় উপকূলে ৪২৬ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়। এরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খাবার ও পানি ছাড়া নৌকায় আটকে ছিলেন। গত দু সপ্তাহে দু হাজারেরও বেশি মানুষ পাচারকারীদের নৌকায় করে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মাটিতে নামতে পারলেও এর চেয়ে কয়েক গুণ মানুষ আন্দামান সাগর ও থাই উপকূলের কাছে আটকা পড়ে আছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো ধারণা করছে। গত কয়েক দিনে ওই তিন দেশের উপকূলরক্ষীরা মানুষবোঝাই বেশ কিছু নৌকা উপকূলে ভিড়তে না দিয়ে গভীর সাগরে ঠেলে দেয়, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। জাতিসংঘ মহাসচিব, ইউএনএইচসিআর, ওএইচসিএইচআর, আইওএম এর প্রতিনিধি গত মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে সাগরে বিপদগ্রস্ত এই মানুষদের প্রাণ বাঁচানো এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।