২০ পরিবারসহ ২শ বিঘা জমির ফসল ঘরে তোলার রাস্তা বন্ধ হওয়ার উপক্রম

চুয়াডাঙ্গার দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা পাঁচিল নির্মাণ

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমনা পাঁচিল নির্মাণের কাজ শুরু করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সীমানা পাঁচিল নির্মাণ করে স্কুলটি সুরক্ষা করার ব্যবস্থা করা হলেও ৫০ বছর ধরে মানুষের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। সম্পূর্ণ পাঁচিল গড়ে ওঠার আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে ২০ পরিবার ও মাঠের প্রায় ২শ বিঘা জমির ফসল কেটে ঘরে তুলতে ভোগান্তিতে পড়বে গ্রামবাসী।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের শিক্ষানুরাগীরা নিজেদের সন্তাদের লেখাপাড়া শেখানোর জন্য ১৯৩৬ সালে ৭৯ শতক জমির ওপর গড়ে তোলেন দোস্ত গ্রাম নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশ স্বাধীনের পর সেটি সরকারি করণ হয়ে দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। ৫০ বছর ধরে বিদ্যালয়ের পশ্চিমপার্শ্বে অবস্থিত ২০ পরিবার এবং প্রায় ২শ বিঘা জমিতে চাষাবাদকারী কৃষকেরা বিদ্যালয়ের মাঠ দিয়ে বাড়িতে যাতায়াত এবং মাঠের ফসল ঘরে তুলে থাকে। সম্প্রতি পিডিপি থ্রি প্রকল্পের অর্থায়নে ৯ লাখ টাকা ব্যায়ে বিদ্যালয়টির সীমানা পাঁচিল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সীমানা পাঁচিল গড়ে উঠলে ওই সমস্থ পরিবারের লোকজন এবং মাঠের ফসল ঘরে তোলার একমাত্র রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে।
গ্রামের সোহাগ, আব্দুল হান্নান, সুমন, সুজন, পলাশ, কেরামত আলী, রবিউল শিকদার, আলমগীর হোসেন, বারেক, হারুন, মান্নান শেখ, জিয়ারুল অভিযোগ করে বলেন, সরকারি পৃষ্টপোষকতায় বিদ্যালয় পরিচালিত হলেও বিদ্যালয় হচ্ছে সামাজিক প্রতিষ্ঠান। যেখানে আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করে। বিদ্যালয়ের সীমনা পাঁচিল হোক এটা আমরা চাই। তবে বাপ-দাদার আমল থেকে যে রাস্তা দিয়ে মাঠের ফসল এবং বাড়িতে যাতায়াত করি সেই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে বিপদে পড়ে যাবো। কারণ বাড়ি থেকে বের হওয়া এবং মাঠ থেকে ফসল তোলার একমাত্র রাস্তা এটি। রাস্তার সমাধন করে বিদ্যালয়ের পাঁচিল হোক তাতে আমাদের বাধা নেই।
এদিকে প্রথম দিকে গড়ে ওঠা বিদ্যালয়ের জমির উত্তরপার্শ্বে টিনসেডের একটি পরিত্যক্ত ঘর রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ওই ঘরটি ভেঙে ফেলে পাঁচিল দিলে বিদ্যালয়ের যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি যাতায়াতের রাস্তাও সমাধান হবে বলে এলাকাবাসী মনে করছে। তাই অভিযোগকারীদের দাবি যাতায়াতের রাস্তার সমাধান করে বিদ্যালয়ের পাঁচিল নির্মাণ হোক। অভিযোগকারীরা আরও বলেন, সমস্যার সমাধান না করে এ নিয়ে কেউ কেউ রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে। মানুষ চলাচলের রাস্তা নিয়ে রাজনীতি এটা ভালো মানুষের কাজ না।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহিদা বেগম বলেন, আমরা চাকরি করি। এর সমাধান সেখানকার লোকজন করবে। আমার কিইবা করার আছে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৃনাল কান্তি দে বলেন, যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হওয়া ঠিক না। তার পরও বিষয়টি জেনে উভয়কুল বজায় রেখে কিভাবে সমাধান করা যায় তার ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টির প্রতি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তোভোগীরা।