১০ বছরের সব গৃহকর্মীর তথ্য অবস্থান জানতে চায় সরকার

 

স্টাফ রিপোর্টার: দুই দফা কেলেঙ্কারির পর গত ১০ বছর বিদেশে নিয়ে যাওয়া কূটনীতিকদের প্রত্যেক গৃহকর্মীর খোঁজখবর জানতে চেয়েছে সরকার। বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোর চ্যান্সারি প্রধানদের ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়েছে। মিশনের কোন কর্মকর্তা কতোজন গৃহকর্মী কোন দেশে নিয়েছেন এবং সেসব কর্মী এখন কোথায় রয়েছেন তা সুস্পষ্টভাবে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। নিউইয়র্কে দুই বাংলাদেশি কূটনীতিক গ্রেফতার ও আরেক কূটনীতিকের তড়িঘড়ি যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের পর আর কোনো বিতর্কে না জড়াতেই এ সতর্কতা। অবশ্য এর আগেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গৃহকর্মী নেয়ার ওপর আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গত ৯ জুলাই ইস্যু করা চিঠিতে বলা হয়েছে, দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের সাথে যাওয়া গৃহকর্মীরা নিয়োগকর্তার সাথে পরবর্তী কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন না বা ঢাকায়ও ফিরছেন না। অনেক ক্ষেত্রে তারা পালিয়েও যাচ্ছেন। কিছু কর্মী পরবর্তীতে নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে অপরাধ আইনে মামলাও করছেন। এতে ওই কর্মকর্তার ক্যারিয়ারই শুধু হুমকিতে পড়ছে না, মন্ত্রণালয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছে এবং সর্বোপরি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে গৃহকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।

জানা যায়, গত মাসে গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় নিউইয়র্কে সাত দিনের ব্যবধানে দুই বাংলাদেশি কূটনীতিক গ্রেফতার হন। গত ১২ জুন গৃহকর্মী নির্যাতনের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছিলো নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলামকে। ৩৬ ঘণ্টা পর ৫০ হাজার ডলার বন্ডে তাকে জামিন দেয়া হয়। এর সাত দিনের মাথায় গ্রেফতার হন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির বাংলাদেশি কর্মকর্তা হামিদুর রশিদ। এক গৃহকর্মীকে ঠকানো ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে হামিদুর রশিদকে গ্রেফতার করে নিউইয়র্ক পুলিশ। সাত ঘণ্টা পর আড়াই লাখ ডলার বন্ডের বিপরীতে শর্তসাপেক্ষে তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। তবে শাহেদুল ও হামিদুর উভয়েরই পাসপোর্টসহ যাবতীয় ট্রাভেল ডকুমেন্ট সোপর্দ করতে হয় আদালতে। একই রকম পরিস্থিতি এড়াতে চলতি মাসে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেন লস অ্যাঞ্জেলেসের ডেপুটি কনসাল জেনারেল কাজী আনারকলি। তারও গৃহকর্মী পলাতক। কিন্তু আনারকলির বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। এর আগে ২০১৪ সালে গৃহকর্মীর মামলার ঘটনায় দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে গ্রেফতার এড়ান নিউইয়র্কের তৎকালীন কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম।