হুইপের নির্দেশে অবশেষে বেলগাছি গ্রামবাসী ফিরে পেলো বিদ্যুত সরবরাহ

আলমডাঙ্গায় পল্লি বিদ্যুতের দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে নাভিশ্বাস গ্রাহক সাধারণের

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: জাতীয় সংসদের হুইপের নির্দেশে আলমডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামের মালিথাপাড়ার মানুষ ৭ দিন পর পুনরায় বিদ্যুত ফিরে পেলো। সম্প্রতি ওই পাড়ায় ২৫ কেভির একটি ট্রান্সফরমার নষ্ট হলে তা মেরামত করে দিতে গ্রামের একটি দালালচক্র পল্লি বিদ্যুতের আলমডাঙ্গা জোনাল অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে ৪২ হাজার টাকা দাবি করে আসছিলো বলে অভিযোগ ওঠে। হুইপের হস্তক্ষেপে বিনা খরচে কেভি মেরামত হওয়ায় উৎফুল্ল গ্রামবাসী।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি গ্রামের মালিথাপাড়ায় পল্লি বিদ্যুতের ২৫ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ট্রান্সমিটার নষ্ট হয়ে যায়। আর মোক্ষম সুযোগ পেয়ে যায় ওই এলাকার পল্লি বিদ্যুতকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দালাল সিন্ডিকেট। এ দালালচক্রটি আলমডাঙ্গা অফিসের চিহ্নিত আরেক চক্রের সাহায্যে মেতে ওঠে বাণিজ্য। তারা গ্রামের গ্রাহকদের নিকট নষ্ট ট্রান্সফরমার মেরামতের জন্য ৪২ হাজার টাকা দাবি করে। অথচ নিয়মানুযায়ী বিনা টাকায় পল্লি বিদ্যুত কর্তৃপক্ষেরই তা মেরামত করে দেয়ার কথা। ৪২ হাজার টাকার জোগান দিতে না পারায় দালালচক্রের সাথে হাত মিলিয়ে পল্লি বিদ্যুত কর্তৃপক্ষও বেলগাছি গ্রামের নষ্ট কেভি মেরামত করে দিতে কোনোভাবেই রাজি হয়নি। বিপুল অঙ্কের টাকা দালালের হাতে তুলে দিতে না পারায় শাস্তি স্বরূপ বিদ্যুতবিহীন রাখা হয় গ্রামবাসীকে। পরপর ৭ দিন বিদ্যুতবিহীন অন্ধকারে রাখা হয়। পবিত্র রমজানে অন্ধকারে থাকা অসহায় গ্রাহক সাধারণ অবশেষে বিষয়টি হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপিকে অবহিত করেন। তিনি গতকাল মেহেরপুর পল্লি বিদ্যুত সমিতির জিএমকে নির্দেশ দেন অবিলম্বে বেলগাছি গ্রামের নষ্ট কেভি মেরামত করে বিদ্যুত সংযোগ দিতে। এ নির্দেশ পেয়েই গতকালই নষ্ট কেভি মেরামত করে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়। বিনা অর্থে পুনরায় বিদ্যুত সংযোগ পাওয়ায় ভীষণ খুশি গ্রামবাসী।

সম্প্রতি উপজেলার চরপাড়া-বেগুয়ারখাল গ্রামে বিদ্যুত সংযোগকে কেন্দ্র করে অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে দু দালালের মধ্যে ২ দিন ধরে মারামারি। বিনোদপুর গ্রামে দালাল কর্তৃক নতুন সংযোগ বাবদ ১২ হাজার করে টাকা আদায় করে নেয়ার পরও বিদ্যুত সংযোগ না পাওয়ায় গ্রাহকরা টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার রামদিয়ার সুমন আলী যিনি পল্লি বিদ্যুতের ওয়ারিং মিস্ত্রি। তার বিরুদ্ধে এলাকার শ শ গ্রাহকের নিকট থেকে নির্ধারিত অর্থের চেয়ে ৭/৮ গুন অধিক অর্থ আদায় করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সম্প্রতি ওই এলাকার ৬ গ্রাহক পল্লি বিদ্যুতের আলমডাঙ্গা জোনাল অফিসের ডিজিএম’র নিকট অভিযোগ দিয়েছেন। সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে আলমডাঙ্গা জোনাল অফিসের বেজায় আপত্তি। নানা অজুহাতে গত প্রায় ২ মাস বিগত হলেও সে তদন্ত শুরু করা হয়নি। দালালের আধিপত্য দূর করতে পল্লি বিদ্যুতের পক্ষ থেকে নামমাত্র মাইকিং আসলে লোক দেখানো বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। তাদের দাবি ভেতরে ভেতরে পল্লি বিদ্যুতের কর্মকর্তারা দালাল পোষেন। অথচ বাইরে মাইকিং করে লোক বোঝানো যে দালালচক্রের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।