হাসপাতালে ভিড়ের মধ্যে মহিলার ৩০ হাজার টাকা চুরি

মাঝে মাঝে আসা সেই সঙ্ঘবদ্ধ চোর এবার মোটা দান মেরে সটকেছে

 

স্টাফ রিপোর্টার: মাঝে মাঝে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আসা মহিলা চোর এবার বড় ‘দান’ মেরে কৌশলে সটকেছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে এক শিশু রোগীর মায়ের ভ্যানিটিব্যাগ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা চুরি হলে স্থানীয়রা এ মন্তব্য করে বলেছেন, পূর্বে ধরা পড়া মহিলা চোর বলেছিলো সপ্তায় তিন দিন আসি, সেই চোরই কিছুদিন বিরতির পর কি এসে টাকা চুরি করে সটকালো?

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা মুসলিমপাড়ার রিকশাচালক শুকুর আলীর স্ত্রী শরিফা খাতুন তার মা আমেনা খাতুন ও অসুস্থ শিশুকন্যা সুমাইয়াকে সাথে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। মায়ের জমি বিক্রির নগদ ৩০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য ভ্যানিটিব্যাগে নেন শরিফা খাতুন। অসুস্থ শিশুকন্যাকে হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার কথা ছিলো। তার আগেই সর্বনাশ!

শরিফা খাতুনের মেয়েকে হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলনের চেম্বার অর্থাৎ হাসপাতালের দোতলার ২০৭ নং কক্ষের সামনে যান। সেখানে তখন রোগীর লম্বা লাইন। উপচেপড়া ভিড়। ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন শরিফা। লাইনে দাঁড়িয়ে যখন শরিফা চিকিৎসকের চেম্বারে প্রবেশের সুযোগ পান, তখন তিনি ব্যাগের দিকে তাকিয়ে দেখেন চেন খোলা। চমকে ওঠেন। ব্যাগ হাতড়ে দেখেন- টাকা নেই। সেখানেই কান্নায় ভেঙে পড়েন শরিফা। মাঝে মাঝেই মুর্ছা যেতে থাকেন তিনি। অতো টাকা নিয়ে হাসপাতালে ভিড়ের মধ্যে কেন এ প্রশ্নও তোলেন উপস্থিত জনতা।

শরিফার পাশে থাকা তার মা আমেনা খাতুন বলেন, আমার তিন মেয়ে। ছেলে নেই। মেয়েদের বাড়িতেই থাকি। স্বামীর রেখে যাওয়া কিছু জমি বিক্রি করে পাওয়া টাকা ব্যাংকে রেখেছি। আবারও ৩০ হাজার টাকা হাতে এলে তাও ব্যাংকে রাখার জন্য মেয়ে শরিফার কাছে রাখি। শরিফার মেয়ে অসুস্থ। মেয়েকে ডাক্তার দেখিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার কথা ছিলো। এর আগেই তো টাকাগুলো চোরে চুরি করে নিয়ে গেলো।

হাসপাতালের অনেকেই বলেছেন, বেশ কিছুদিন আগে হাসপাতালে সঙ্ঘবদ্ধ মহিলা চোর ধারাবাহিকভাবে চুরি করে আসছিলো। তাদের দুজন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চুরির সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদে বলে, পোড়াদহে থাকি। আসল বাড়ি দিনাজপুরে। মাঝে মাঝে আসি। রোগী সেজে হাসপাতালের টিকিট নিয়ে ভিড়ের মধ্যে সুযোগ বুঝে চুরি করে সটকে পড়ি। তারাই কি ফের চুরি করে সটকেছে? প্রশ্নের জবাব নেই। সে কারণে হাসপাতালের কনসালটেন্ট চেম্বারের সামনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি বিশেষ নজরদারির দাবি উঠেছে। একই সাথে হাসপাতালের দোতলায় পাশাপাশি দুজন কনসালটেন্ট চিকিৎসকের চেম্বারও সরানো দরকার বলে অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, কনসালটেন্ট চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে প্রতিদিনই ভিড় হয়। আর এ ভিড়ের সুযোগে চোর চুরি করে পালায়।