হাসপাতালে এন্টিস্নেক ভেনম দেয়ার পরও বাঁচানো গেলো না স্কুলছাত্র আশিকুরকে : একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মায়ের বুকফাটা আহাজারি

স্টাফ রিপোর্টার: সাপে কাটার পর বাঁধন দিয়ে হাসপাতালে নেয়া হলো, ১০ অ্যাম্পুল এন্টিস্নেক ভেনমও দেয়া হলো- এরপরও বাঁচানো গেলো না ৮ম শ্রেণির ছাত্র আশিকুর রহমানকে (১৫)। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পর এন্টিস্নেক ভেনম প্রয়োগেও রোগী বাঁচাতে না পারার এই প্রথম ঘটনা ঘটলো। কিন্তু কেন?

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ বললেন, সাপে কাটার পর রোগী হাসপাতালে নেয়ার আগেই বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছিলো। হাসপাতালে নেয়া হয় বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে। রোগী দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান এন্টিস্নেক ভেনম প্রয়োগের কথা বলেন। ওষুধ প্রয়োগও শুরু হয়। ১০ অ্যাম্পুল ভেনম প্রয়োগের পরও রোগী সুস্থ না হওয়ায় খানেকটা হতবাক হতে হয়েছে বটে।

আশিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গা বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়ার অসহায় নারী আমেনা খাতুনের ছেলে। আশিকুর রহমানের পিতা আকুল আনেক আগেই নিরুদ্দেশ। একমাত্র ছেলে আশিকুর রহমানকে নিয়েই আমেনা খাতুন বেঁচে ছিলেন। গতকাল সাপে কেটে আশিকুরের মৃত্যু হলে আমেনা খাতুনের বুকফাটা আহাজারিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।

জানা গেছে, আশিকুর রহমান উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ছিলো। আকন্দবাড়িয়া গ্রামের মৃত আবেদ আলী তার নানা। ওই নানা বাড়ি মায়ের সাথে থেকে সংগ্রাম করেই বড় হয়ে উঠছিলো সে। গতকাল দুপুর আশিকুর গ্রামসংলগ্ন বরিঙের মাঠে যায় ঘাস কাটতে। ঘাস কাটার সময় তার পায়ে দংশন করে বিষধর সাপ। সাপে কাটা পায়ে বাঁধন দেয়া হয়। নেয়া হয় হাসপাতালে। মৃত্যুর পর বাগানপাড়ার এক ওঝার কাছে নেয়া হয়। পরে নেয়া হয় আকন্দবাড়িয়ায়। সেখানেই গতরাতে দাফন কাজ সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া করেন নিকজনেরা।