হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান ও জীবননগরের ডাবলুসহ গ্রেফতার ৮

বিএনপি নেতাকর্মীদের নতুন করে গ্রেফতার অভিযান শুুরু করেছে পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি নেতাকর্মীদের নতুন করে গ্রেফতার অভিযান শুুরু করেছে পুলিশ। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘিরে বিগত পাঁচ দিনে ঢাকাসহ সারদেশে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। গতকাল জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ডাবলু, ঝিনাইদহ হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ মজিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও আলমডাঙ্গা বিএনপির ৪ জন ও দামুড়হুদার ২জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল রোববার ঢাকার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির
রিজভী বলেন, সরকার তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বেপরোয়া গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গোয়েন্দা পুলিশ ঝাপটা মেরে ধরছে। শনিবার দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা চলাকালে এবং সভা শেষে যাওয়ার পথে ৩৫ জনকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করেছে। বিগত পাঁচ দিনে সারাদেশে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার রায় প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন সম্পূর্ণ নির্দোষ। জাল নথির ওপর ভিত্তি করে এই অসত্য মামলায় তাকে দীর্ঘদিন হয়রানি ও হেনস্ত করা হয়েছে। এখন ৮ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্ত দেখার জন্য অপেক্ষা করছে জনগণ। ন্যায়বিচার হলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে না।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, আগামী ৮ ফেব্রয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদালত কর্তৃক বিচারারীন মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জীবননগরে নাশকতা সৃষ্টি করা হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে পুলিশ জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ডাবলুকে গ্রেফতার করেছে। হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকন হতে গতকাল রোববার দুপুরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান ডাবলু জীবননগর হাসপাতালপাড়ার আতাহার আলীর ছেলে ও পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। থানা অফিসার ইনচার্জ ইন্সেপেক্টর মাহমুদুর রহমান বিএনপি নেতা ডাবলুর আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এদিকে বিএনপির এ নেতার গ্রেফতার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দল ও অঙ্গ সংগঠনের অন্যান্য নেতা-কর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাশকতা মামলার ৪ আসামীকে আটক করেছে। গতপরশু রাতে ও গতকাল বিকালে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। জানাগেছে, উপজেলার কালিদাসপুর গ্রামের মৃত খেলাফত হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন(৪৭) জেলা বিএনপির সদস্য। উপজেলার তিওরবিলা গ্রামের মজিবার রহমানের ছেলে খাইরুল ইসলাম(৪০) ও কাবিলনগর গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে জামিরুল ইসলাম(৪১), আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত শেখ দাউদ আলীর ছেলে মুক্তারুজ্জামান ওরফে মুক্তার আলী(৪০)। উপজেলার পাঁচলিয়া গ্রামের ২০১৭ সালে রাতের আধারে নাশকতা পরিকল্পনা বৈঠকের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আলমডাঙ্গা থানাপুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করে। পরে ১০ জুন ২০১৭সালে আলমডাঙ্গা থানায় একটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে। ওই মামলার আসামী হিসেবে গত কাল ও পরশু অভিযান চালিয়ে আনোয়ার হোসেন, খাইরুল, জামিরুল ও মুক্তার আলীকে আটক করে নিয়ে আসে। গতকালই ৩ জনকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। একজনকে আজ আদালতে প্রেরন করা হবে।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক ইউসুফ আলী (৪৮) ও নাটুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সামসুল আলম মেম্বারকে (৫৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। বিএনপি নেতা ইউসুফ আলী ডুগডুগি গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের বিশ্বাসের ছেলে এবং সামসুল আলম উপজেলার চারুলিয়া গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আকরাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, নাশকতামূলক ঘটনা ঘটাতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ সোমবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছে, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এম এ মজিদকে যশোর বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। তিনি বিমানে ঢাকা যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে এসেছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিমানবন্দর থেকে মজিদকে গ্রেফতার করা হয়। কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজমল হুদা জানান, ঝিনাইদহ সদর থানায় নাশকতা মামলার আসামি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বিমানে করে যশোর থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন। এসময় পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে নাশকতা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে বলেও জানান ওসি। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক জানান, তিনি এম এ মজিদের গ্রেফতারের খবর শুনেছেন। তিনি ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও হরিনাকুণ্ডু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।