হত্যাকাণ্ড আড়াল করতে না পেরে ঘাতক দাদার আত্মগোপন

রুবিনার মা

ফলোআপ: চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের গঙ্গাদাসপুরে দাদার লাঠির আঘাতে নাতি নিহত

ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে ছেলে মামলা করলেন পিতার বিরুদ্ধে : আজ ময়নাতদন্ত 

জীবননগর ব্যুরো: না, রাতারাতি শিশু আল মিরাজের মৃতদেহ দাফন করতে পারেননি খুনি দাদা মনজুর কাদের। হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে না পেরে শেষ পর্যন্ত আত্মগোপন করেছেন তিনি। অপরদিকে দুপুরে তার ছেলে ইকরামুল হক বাদী হয়ে জীবননগর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ অবশেষে শিশু আল মিরারেজ মৃতদেহ উদ্ধার করে গতরাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে নিয়েছে। আজ শুক্রবার ময়নাতদন্ত করা হবে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে দাদার লাঠির আঘাতে প্রাণ গেছে ৪ মাস বয়সী নাতি ছেলের। ক্ষেতের ধানের ভাগ নিয়ে পিতা-ছেলে বিরোধের জের ধরে গত বুধবার রাতে উপজেলার গঙ্গাদাসপুরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শিশু আল মিরাজ এসময় তার মায়ের কোলে ছিলো। শিশু মিরাজের এমন করুণ মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারটিতে শোকের মাতম চলছে। পুত্র শোকে পাথর হয়ে গেছে মা মাবিয়া। এদিকে এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার সময় দাদা মনজুর কাদেরকে আসামি করে থানাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বিকেলে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা মর্গে প্রেরণ করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, উপজেলার গঙ্গাদাসপুর গ্রামের পিতা মনজুর কাদের ও ছেলে ইকরামুল হক একই বাড়ির মধ্যে পৃথকভাবে বসবাস করেণ। পৃথকভাবে বসবাস করলেও তারা এবার মাঠে একসাথে ইরি ধানের চাষ করেছেন। এ ধানের ভাগাভাগি নিয়ে পিতা-পুত্রের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। বুধবার রাত ৭টার দিকে পিতা-ছেলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে ইকরামুলের স্ত্রী মাবিয়া খাতুন স্বামীর পক্ষ নিয়ে এগিয়ে আসে এবং শ্বশুরের গালমন্দর প্রতিবাদে করতে থাকে। এসময় শিশু মিরাজ তার কোলে ছিলো। ক্ষিপ্ত শ্বশুর মনজুর কাদের পুত্রবধূকে মারতে তার মাথায় লাঠির আঘাত করেন। অন্ধকারে লাঠির আঘাত গিয়ে লাগে শিশুর মিরাজের মাথায়। সাথে সাথে সে জ্ঞান হারায়। আচেতন অবস্থায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। এখানে চিকিসাধীন আবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়।

এদিকে শিশু মিরাজের লাশ চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল হতে কৌশলে বাড়ি এনে রাতেই দাফনের চেষ্টা করে প্রতিরোধের মুখে ব্যর্থ হয় দাদা মনজুর কাদের। পরে তিনি পালিয়ে যান বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে থানাতে যোগাযোগ করা হলে থানা অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক জানান, বিকেলে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং মিরাজের পিতা ইকরামুল বাদী হয়ে পিতা মনজুর কাদেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।