স্কুলছাত্র সজিব হত্যা মামলার পলাতক আসামি মামুন ও শাহিন গ্রেফতার : দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান

 

চুয়াডাঙ্গা সার্কিট হাউজের সামনের ঝোপের মধ্য থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাইচি ও রক্তমাখা জামা-প্যান্ট উদ্ধার

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র সজিব হত্যা মামলার পলাতক আসামি উজিরপুরের তোতা মিয়ার ছেলে মামুন এবং দামুড়হুদা দশমীপাড়ার কুদ্দুসের ছেলে শাহিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৱ্যাব ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল খালেক জানান, তাদের গ্রেফতারের পর মামুনের দেয়া তথ্য মোতাবেক চুয়াডাঙ্গা সার্কিট হাউজের সামনের একটি ঝোঁপের মধ্য থেকে নিহত সজিবের পরনের রক্তমাখা জামা-প্যান্ট ও হত্যা কাজে ব্যবহৃত কাঁইচি উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার বাদী নিহত স্কুলছাত্র সজিবের মামা আব্দুল হালিম ওই জামা-প্যান্ট সজিবের বলে নিশ্চিত করেন। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেছে। চুয়াডাঙ্গা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আসামি মামুনকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া অপর আসামি শাহিনকে আজ শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে। এর আগে ওই মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে চুয়াডাঙ্গা সিঅ্যান্ডবিপাড়ার কোরবান আলী ও তার স্ত্রী-ছেলেকে আটক করা হয়। তাদের ৬ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালতে বিজ্ঞ বিচারক। মামলার অন্য পলাতক আসামিদের খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।chuadanga-sojib-09-09-16

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা চত্বরে অনুষ্ঠিত বৃক্ষমেলা প্রাঙ্গণ থেকে চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র দামুড়হুদা ব্রিজপাড়ার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে সজিব নিখোঁজ হয়। এ সংক্রান্তে নিহত সজিবের মামা আব্দুল হামিদ পরদিন দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেন। নিখোঁজের ৩২ দিনের মাথায় চুয়াডাঙ্গা শহরের সিঅ্যান্ডবিপাড়ার মৎস্য ভবনের পাশের একটি লাইট ফ্যাক্টরির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে ৩১ আগস্ট বুধবার সকালে স্কুলছাত্র সজীবের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হয়। মোবাইল ট্রাকিঙের মাধ্যমে হত্যা ঘটনার সাথে জড়িত কয়েকজনকে আটকের পর তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ওই লাইট তৈরির ফ্যাক্টারিতে অভিযান চালায় ৱ্যাবের একটি বিশেষ টিম। তারা ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের সহযোগিতায় প্রায় ২৫ ফুট গভীর সেপটিক ট্যাংকের মধ্য থেকে সজিবের লাশ উদ্ধার করে। বিকেলে নিহত সজিবের মামা আব্দুল হালিম বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়ার ইমান আলীর ছেলে একাধিক হত্যা মামলার আসামি বহু গুম, খুন ঘটনার নায়ক রাকিবুল ইসলাম ওরফে রাকিব মেম্বার (২৮), তার ভাই আলামিন (২৫), কেদারগঞ্জপাড়ার হামিদুল ইসলাম মিয়ার ছেলে সবুজ (২৩), হাটকালুগঞ্জের ওয়াজেদ আলীর ছেলে পিনু (২৬), দামুড়হুদা দশমীপাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শাকিল (২৩) এবং দামুড়হুদা উজিরপুরের তোতা মিয়ার ছেলে মামুন (২২) এই ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে দামুড়হুদা মডেল থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন।