সোনালী ব্যাংক ডিঙ্গেদহ শাখার পাঁচ কর্মকর্তা মিলে ব্যাংকের ৬৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অপচেষ্টা?

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ডিঙ্গেদহ শাখার আয়-ব্যয় হিসাবের ৬৫ লাখ টাকা ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপকসহ পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ হিসাবে সরিয়ে নেয়ার প্রমাণ মিলেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করে বাকিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বদলির ব্যবস্থা নিয়েছে।

সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফরিদপুর বিভাগীয় কার্যালয় থেকে আসা পর্যবেক্ষক দলের প্রধান গত ৫ জুলাই সমস্ত নথিপত্র ঢাকা সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রিন্সিপাল কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক আমির হোসেন জানান, গত ২৬ জুন সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের বিভাগীয় কার্যালয় ফরিদপুর থেকে মহাব্যবস্থাপক সরদার নূরুল আমিন (বর্তমানে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত) ডিঙ্গেদহ সোনালী ব্যাংক শাখার গ্রাহকদের আয়-ব্যয়ের হিসাবে ওই ৬৫ লাখ টাকা কয়েকজন ব্যাংক কর্মচারীর নিজ নিজ হিসাবে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি চিহ্নিত করেন। ওই টাকা ব্যাংক ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান, কনিষ্ঠ ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুল আলম ও কর্মকর্তা মিজানুর রহমানসহ আরও দুজন কর্মচারীর হিসাবে পাওয়া যায়। কর্মচারী দুজনের নাম তিনি গোপন করে বলেন, ‘তাৎক্ষণিক মহাব্যবস্থাপক বিষয়টি চিহ্নিত করে চুয়াডাঙ্গা সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ডিঙ্গেদহ শাখার কর্মকর্তাকে (কম্পিউটার পরিচালক) সাময়িক বরখাস্ত করেন। সেই সাথে তৎকালীন ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামানকে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের কুষ্টিয়া প্রিন্সিপাল কার্যালয়ে ও কনিষ্ঠ ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুল আলমকে ওই ব্যাংকের কুষ্টিয়া মিরপুর শাখায় শাস্তিমূলক বদলির নির্দেশ দেন। এরপর তিনি তাদের সমস্ত নথিপত্র ব্যাংকের বিভাগীয় কার্যালয় ফরিদপুর নিয়ে যান। ব্যাংকের আয়-ব্যয় হিসাবের ৬৫ লাখ টাকা ৫ জন কর্মচারীর নিজ নিজ হিসাবে সরিয়ে নেয়ার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সেখান থেকে গত ৫ জুলাই সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।’ তারা অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

চুয়াডাঙ্গা সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ডিঙ্গেদহ শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান ঘটনাটির সত্যতা কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটার পর আমরা টাকাগুলো ফিরিয়ে দিই। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। তদন্তের ব্যাপারটি ঠিক হয়ে যাবে।’ ওই ব্যাংক শাখার তৎকালীন (কম্পিউটার পরিচালক) কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘কোনো কাজই ব্যাংক ব্যবস্থাপকের নির্দেশ ছাড়া হয় না। কিন্তু আমার ওপর দোষ চাপিয়ে তারা পার পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, আমার ওপর চাপ থাকায় আমি সঠিক ও সত্য ঘটনাটি তদন্তকারী দলের সামনে বলতে পারিনি। আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি অন্যায্য। ফরিদপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক মহাব্বত আলী বলেন, ‘পাঁচজনের বিরুদ্ধে করা তদন্ত প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আরও ব্যবস্থা নেয়া হবে।