সেরাদের সেরায় চুয়াডাঙ্গার অতীত রেকর্ড অতিক্রম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধে গ ইউনিটে চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার্থীরা চরম হতাশ করলেও ক ইউনিট তথা বিজ্ঞান বিভাগে প্রত্যাশার পাঁচিল টপকেছে। বিগত দিনের সকল রেকর্ড ভেঙে এবার চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে ৮ জন। অপেক্ষমাণ তালিকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ১১ জন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত হয় ফলাফল। ২৭টি বিষয়ের ওপর ১ হাজার ৬৪০টি আসনের বিপরীতে ভর্তিযুদ্ধে অংশ নেয় সারাদেশের প্রায় ৮৯ হাজার। এরা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেই ভর্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার সুযোগ পায়। আর তাদের মধ্যে যারা ভর্তিযুদ্ধে মেধার ভিত্তিতে সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে তারা কতোটা মেধাবী? এবার মেডিকেল, বুয়েট ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সে কারণে দেশের সেরা মেধাবীদের কেউই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেনি। চুয়াডাঙ্গা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিগত বছরগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় থেকেছে এক থেকে দুজন, এবার সেখানে ৮ জন। সে হিসেবে শিক্ষানুরাগীদের অভিমত, এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা মেধা তালিকায় ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা অবশ্যই সেরাদের সেরা।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয়বারের মতো ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার মাত্র একজন মেধা তালিকায় ভর্তির যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছে। আর দেশের বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজে পড়ে চুয়াডাঙ্গার যে সকল শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে তাদের মধ্যেও মাত্র একজন ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। সূত্র বলেছে, বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজ থেকে এ বছর চুয়াডাঙ্গার ১৭ জন ছেলে-মেয়ে এইচএসসি পাস করেছে। এর মধ্যে ৫/৬ জন সেনাবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চুয়াডাঙ্গার যে সকল শিক্ষার্থী সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে বলে জানা গেছে, মেধাক্রমে তারা হলো- আলমডাঙ্গা উপজেলার রংপুরের মজনু এলাহী ও বিলকিস বানুর ছেলে সজিবুল ইসলাম (মেধা তালিকায় ৮৬তম), গড়চাপড়ার মিজানুর রহমান ও রুনা লায়লার ছেলে আবদুল্লাহ-আল-মামুন, সোনাতনপুরের শহিদুল ইসলাম ও চায়না খাতুনের ছেলে সানাউল্লাহ আশিক, দামুড়হুদা উপজেলার দশমীপাড়ার আব্দুল হাই বাচ্চু ও জাহানারা পারভীন বিউটির ছেলে মিনহাজুল আবেদীন কুয়াশা, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাসপাতাল রোডের তরুণ কান্তি ঘোষ ও কৃষ্ণা বোসের মেয়ে নীলাঞ্জনা ঘোষ, হাসপাতালপাড়ার মোয়াজ্জেম হোসেন ও হাসিনুন নাহার পুষ্পর ছেলে মুন্তাসির মুনেম প্রান্ত, সিনেমাহলপাড়ার বিশ্বনাথ কর্মকার ও প্রতিমা কর্মকারের মেয়ে অদিতি কর্মকার এবং দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা মোবারকপাড়ার আব্দুল কাইয়্যুম ও নাজনীন সুলতানার ছেলে আলী হাসান সিফাত। এর মধ্যে কুয়াশা পুরাতন ব্যাচের, সিফাত দর্শনা সরকারি কলেজের এবং নীলাঞ্জনা ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী। বাকি ৫ জন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।

অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এবারও বিগত দিনের মতো পর পর তিন বছরের ভর্তি চিত্র সামনে রেখেই প্রথম ৪ হাজার ভর্তিচ্ছুদের ক্রমিক নম্বর রাখা হয়েছে। যাদেরকে সুবিধাজনক অবস্থানে রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার ১১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। মেধাক্রমে এরা হলো- চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুক্তিপাড়ার সাইদুর রহমানের মেয়ে সুমাইয়া রহমান, আলমডাঙ্গা বটিয়াপাড়ার তসলিমুর রহমানের মেয়ে জাকিয়া আফসারী চাঁপা, চুয়াডাঙ্গা সিনেমা হলপাড়ার ইছাহক আলীর মেয়ে কামরুন্নাহার মেরীন, দর্শনা আজিমপুরের তরিকুল আলমের ছেলে আহনাফ আদীব অর্ক, আলমডাঙ্গা কমলাপুরের সানোয়ার হোসেনের ছেলে রাগবীর হুসাইন রয়েল, চুয়াডাঙ্গা মালোপাড়ার শহিদুল হকের মেয়ে আনিকা হক, গোরস্তানপাড়ার সানোয়ার হোসেন জোয়ার্দ্দারের ছেলে ইসতিয়াক বুলবুল পিয়াস, রেলপাড়ার মনির উদ্দিন জোয়ার্দ্দারের দু ছেলে উচ্ছ্বাস ও উল্লাস, বড়বাজার পাড়ার আব্দুর রহিমের মেয়ে ফারহানা আফরিন লাম এবং শেখপাড়ার মামুদ একরাম জোয়ার্দ্দারের মেয়ে জারিন তাসনিম মৌ। এদের মধ্যে চাঁপা, মেরিন, আনিকা ও উল্লাস ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী। বাকি ৭ জন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।