সালিসে জরিমানার টাকা দিতে না পারায় আত্মহত্যার অপচেষ্টা

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: সালিসসভায় জরিমানার টাকা দিতে না পারার লজ্জায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে আলমডাঙ্গার চিলাভালকি গ্রামের দরিদ্রকৃষক মিনাজ উদ্দীন। গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির সামনের আমগাছে সকলের অগোচরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ছাগলে ক্ষেত খাওয়ার ঘটনায় সালিস মীমাংসায় ক্ষেতমালিক মিনাজকেই ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এলাকাসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার চিলাভালকি গ্রামের মৃত কেতু মণ্ডলের ছেলে দরিদ্র কৃষক মিনাজ উদ্দীনের ক্ষেত খেয়েছে একই গ্রামের বিধবা ফুলজানের ছাগলে। এ সময় ছাগল ধরে মিনহাজ উদ্দীন বাড়িতে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে ছাগল ছেড়ে দেয়। পরে ছাগলমালিক মিনহাজের বাড়ি গিয়ে চড়াও হয়ে কেন তার ছাগলকে মারধর করে তা জানতে চায়। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মিনহাজের স্ত্রীর সাথে বিধবা ফুলজানের মারামারির ঘটনা ঘটে। বাড়িতে ফিরে ফুলজান এ কথা তার ভাইদের জানালে তার ভাইয়েরা গিয়ে চড়াও হয় মিনাজের বাড়ি। এ সময় গ্রামের অনেকেই মধ্যস্থতা করে উভয় পক্ষকে শান্ত করে বাড়ি পাঠায়। বুধবারের এ ঘটনায় গত পরশু ফুলজান এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ করেন।

এদিকে এ ঘটনায় গত শনিবার ঘোলদাড়ি বাজারে এক সালিস বৈঠক বসে। সালিসে প্রথমে দরিদ্র ক্ষেতমালিক মিনাজকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে অনেকের অনুরোধে তা কমিয়ে ১০ হাজার টাকায় পুনর্নির্ধারণ করা হয়। আনন্দ, আব্দুল কুদ্দুস, বাদল, শওকত আলী, শাহাজ উদ্দীন এ সালিসসভা পরিচালনা করেছেন বলে জানা গেছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে জরিমানা নিতান্তই কম করে করেছেন বলে সালিসকারীরা অনেকে গর্ব করে বেড়ালেও দরিদ্র কৃষক মিনাজের পক্ষে এতো টাকা জরিমানা দেয়া মোটেও সম্ভব নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। এ জরিমানার টাকা দিতে না পারায় অপমানে হয়তো তাকে আত্মহত্যা করতে হতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিনাজ উদ্দীন বাড়ির সামনের আমগাছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা করে। সে সময় তাকে বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে হারদী হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সেখানেই তাকে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।