সালাহ উদ্দিনের জামিন নামঞ্জুর

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের জামিন নামঞ্জুর করছেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের একটি আদালত। সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদের করা জামিন আবেদনের ওপর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। আদালত সালাহ উদ্দিনকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২২ মে সালাহ উদ্দিন আহমেদের জামিন চেয়ে স্ত্রী হাসিনা আহমেদ স্থানীয় জেলা আদালতে আবেদন করেছিলেন। সরকারপক্ষের কৌঁসুলি জামিনের বিরোধিতা করেন। তবে বিচারক মামলার নথি আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়ে ২৯ মে শুনানির দিন ধার্য করেন। গতকাল শুক্রবার শুনানির সময় অসুস্থ সালাহ উদ্দিনকে হাসপাতাল থেকে আদালতে হাজির করা হয়নি। তার অনুপস্থিতিতেই শুনানি হয়। শুক্রবার বিএনপির সহদফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি গণমাধ্যমকে জানান, আদালত সালাহ উদ্দিন আহমেদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।

সরকারপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, এ বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দরকারও হতে পারে। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তার শারীরিক অসুস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, তার হার্ট, কিডনি, প্রোস্টেডসহ নানা জটিল রোগ রয়েছে। তিনি খুবই অসুস্থ। তাকে জামিন দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন রেফারেন্স ব্যবহার করেন। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আদালত সালাহ উদ্দিনের জামিন নামঞ্জুর করেন। তাকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশও দেন। সালাহ উদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এসপি মাহান্ত। আইনি হেফাজতে নেয়ার পর শুক্রবার তৃতীয় দিনের মতো মেঘালয়ের শিলংয়ের নেগ্রিমস হাসপাতালে রয়েছেন বিএনপির নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নেগ্রিমসের চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। নেগ্রিমসের (নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস) পরিচালক এজে এহেনগার ও সালাহ উদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এসপি মাহান্ত গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। এহেনগার জানান, বুকের ব্যথার পাশাপাশি ডায়রিয়ায় ভুগছেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকদের বোর্ড তাকে হাসপাতালে রাখতে চাইছে। শিলংয়ের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম লিংদো নংব্রি বুধবার দুপুরে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহ উদ্দিনকে দুই সপ্তার জন্য আইনি হেফাজতে (কারাগারে) পাঠানোর নির্দেশ দেন। দু সপ্তাহ পর শুনানির জন্য তাকে আবার আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে। তবে আদালতে হাজিরের পর সালাহ উদ্দিন বুকে ব্যথা অনুভবের বিষয়টি উল্লেখ করায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তার শুশ্রূষার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর কারাগারে পাঠানোর ছয় ঘণ্টার মাথায় বুধবার রাতে তাকে আবার নেগ্রিমসে পাঠানো হয়। ১১ মে ভোরে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উদভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে দেখে শিলংয়ের গলফ-লিংক এলাকার লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে পাস্তুর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। তার প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেয়া হয় সেখানকার সিভিল হাসপাতালে। শিলং সদর থানা হয়ে নেয়া হয় মানসিক হাসপাতাল মিমহানসে। একদিন পর মিমহানস থেকে আবার তাকে পাঠানো হয় সিভিল হাসপাতালে। ২০ মে সিভিল হাসপাতাল থেকে নেগ্রিমসে নেয়া হয়। নেগ্রিমস হাসপাতালের চিকিৎসকদের ছাড়পত্র পাওয়ার পর পুলিশ মঙ্গলবার বিএনপির এই নেতাকে শিলং সদর থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।