সাবেক হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমডাঙ্গার আবু সাঈদের ইন্তেকাল

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ আলমডাঙ্গার হারদী গ্রামের সন্তান মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মহাসচিব আবু সাঈদ খান আর নেই।গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহে……রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭০ বছর।

গ্রামসূত্রে জানা গেছে,জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ আলমডাঙ্গার হারদী গ্রামের মৃত ইব্রাহীম খানের ছোট ছেলে আবু সাঈদ খান হৃদরোগজনিত কারণে গত বুধবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই তার ওপেনহার্ট সার্জারি করা হয়। এর ৪ দিন পর গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনি স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন। আজ মঙ্গলবার জানাজা শেষে মরহুমের লাশ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্তানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।

হারদী গ্রামের মৃত ইব্রাহীম খানের ৩ ছেলের মধ্যে আবু সাঈদ ছিলেন ছোট। আবু সাঈদ খান প্রথমে গ্রামের বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ঢাকায় পাড়ি জমান উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশে। ছাত্রাবস্থায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ৮নং সেক্টরে তিনি বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীনের পর ২০০১ সালে তিনি মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মহাসচিব ছিলেন। ১৯৭৮ সালে ২য় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই মেয়াদেই তিনি মাত্র ৩৬ বছর বয়সে জাতীয় সংসদের হুইপ মনোনীত হন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পর থেকে রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। এরপর থেকে আমৃত্যু ঢাকার মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। তাদের আপন কেউ গ্রামে না থাকলেও ২/১ বছর পর পর তিনি নিজ গ্রাম হারদীতে আসতেন বলে জানা গেছে। তবে গ্রামের প্রতি তার অপরিসীম ভালোবাসার কথা বললেন দূর সম্পর্কের আত্মীয়রা।

আবু সাঈদ খানের বড় ভাই আবু সালেহ খান ছিলেন ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। ১৯৬৮ সালে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মেজ ভাই রোকনুজ্জামান খান ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। ১৯৮৫ সালে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে এলাকার বেশ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি জানিয়েছেন,কোনো দরকারে তার কাছে গেলে তিনি কাজ করে দিতে সাধ্যমতো চেষ্টা করতেন।মৃত্যুকালে আবু সাঈদ খান স্ত্রী,১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।