সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও সচিবদের সাথে ইসির সংলাপ

সব দলকে ভোটে আনার উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলকে আনতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আস্থা অর্জনের পাশাপাশি উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনাররা। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে সিইসি কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে তারা এমন পরামর্শ দেন। সংলাপ থেকে বেরিয়ে এক-এগারো সরকারের সময়কার সিইসি এটিএম শামসুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কার্যকরী করতে দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করতে হবে। অনেক শক্তিশালী করতে হবে। মানবসম্পদ উন্নয়ন করতে হবে। ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে গেলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং করতে হবে। তারা এটা শুরু করছিলেন। ভবিষ্যতে যা ব্যাপক আকারে দরকার।

তিনি বলেন, কিছু জিনিস আছে যা ইসির আওতাভুক্ত। কিছু জিনিস আছে ইসির কিছু করার নেই। সীমানা নির্ধারণের ফলে গ্রামে আসন সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এজন্য ইসিকে দোষ দেয়া ঠিক হবে না। কেননা, আইন যেভাবে আছে তাতে এমনই হবে। তবে চাইলে আইন সংশোধন করে কিভাবে আসনের বিন্যাস করা যায় তা নির্ধারণ করতে হবে। শহরে বাড়ানো হবে নাকি গ্রামে বাড়ানো হবে তা নির্ধারণ করে দেয়া উচিত। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে এই আলোচনার সমাধান হবে না। কেননা, নির্বাচনের আর এক বছর বাকি আছে। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের কথা যদি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা যদি বলেন, এটা আর হবে না। এটা পারবেন না। কেননা, এটা সংবিধানে আছে। কাজেই যে পরিবেশ এবং অবস্থা আছে এটা মেনে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। ইসি তো এই পরিবর্তন আনতে পারে না। সুতরাং এটা নিয়ে তাদের আলাপই হয়নি। কেননা, এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়। বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন নিয়ে শামসুল হুদা বলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী এখন নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ আলাদা। কাজেই তাদের বিচারিক ক্ষমতা দেয়া, এটা একটা রাজনৈতিক প্রশ্ন। একটা আসনে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেবেন এবং তারা ব্যবস্থা নিতে পারবে তার জন্যও আইনে আছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে আস্থা অর্জন করতে হবে। দলগুলো যদি মনে করে মোটামুটি ভালো পরিবেশ, তবেই তারা আসবে। ভোটার যেন নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে এবং বাড়ি ফিরতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। সেটা বিজিবি র‌্যাব এবং পুলিশের মাধ্যমেই করা সম্ভব।

সাবেক সিইসি বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে ইনডিসিপিস্নন। এটা ঠিক করতে না পারলে নিউক্লিয়ার অয়েপন দিয়েও নির্বাচন সুষ্ঠু করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভোটারকেই দায়িত্ব দিতে হবে। ফাইভ স্টার, থ্রি স্টার নিয়ে ভোটের দিন ঘোরার দরকার নেই। এসপি, ডিসি’র দরকার নেই। ভোটাররাই তাদের এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে। এজন্য ৫০০ জন ভোটারের জন্য একটি স্থায়ী ভোটকেন্দ্র গড়ে দিতে হবে। সরকারি কর্মচারী দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

সাবেক নির্বাচন ছহুল হুসাইন বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এই ইসু্যটা রাজনৈতিক দলের। এটা সেটেলের বিষয়। সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা যে দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তারা থাকবে আইন অনুযায়ী। তার মনে হয়ে, দলগুলোর মধ্যে গ্যাপ দূর করতে ইসি একটা উদ্যোগ নিতে পারে। এতে তারা সফল হবে এর কোনো গ্যারান্টি নেই। তবে সফল না হলেও কোনো দোষ থাকবে না।তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে নির্বাচন কমিশনকে শক্ত ও কঠোর হাতে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচনের ছয় লাখ লোকবলকে মোটিভেট করতে হবে নিরপেক্ষ থাকার জন্য। কেননা, তারা নিরপেক্ষ না থাকলে নির্বাচন নিরপক্ষে হবে না। এজন্য যাদের নিয়োগ করা হবে, তাদের আগে থেকেই চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশন করতে হবে। এছাড়া প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের