সাত খুন মামলার পিপির মেয়েকে হত্যা ও অপহরণ চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার: সাত খুনের মামলার পিপি ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ে মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তিকে (১৯) মিষ্টির নামে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। একই সময় তারা তাকে অপহরণের চেষ্টাও করে। তবে মেয়ের চিৎকারে দুর্বৃত্তরা প্রাইভেটকারে পালিয়ে যায়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বিপরীতে হাজী মঞ্জিল ভিলার নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। প্রাপ্তিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় নিম্ন আদালত প্রদত্ত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ জনের মধ্যে ১১ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত অপর ৯ জনের সাজা আগেরটিই বহাল আছে। এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এ আদালতের পিপি ছিলেন ওয়াজেদ আলী খোকন। পরিচালনা করতে গিয়ে আসামি পক্ষের চোখ রাঙানি ও আইনজীবীদের রোষানলে পড়লেও আইনি লড়াই চালান ওয়াজেদ আলী খোকন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবার সূত্র জানান, নারায়ণগঞ্জ এবিসি স্কুলের ও লেভেলের ছাত্রী প্রাপ্তি হাজী মঞ্জিলের চতুর্থ তলায় তৌহিদুল ইসলামের ‘ম্যাথ’ কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়েন। প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যা ৬টায় প্রাপ্তি প্রাইভেট পড়ার জন্য আসে। এ সময় একটি শাদা রঙয়ের ক্যারিনা প্রাইভেটকারে থাকা কয়েকজন যুবক তার গতিরোধ করে। তখন ওই যুবকরা তাকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তুমি কী ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ে। প্রাপ্তি হ্যাঁ জবাব দেয়। পরে ওই লোকজন বলে, ‘তোমার বাবা তো গতকাল একটা ভালো কাজ করেছে। সে ভালো আইনজীবী। সে ভালো কাজ করেছে। তাই তোমাকে মিষ্টি খাওয়াবো।’তখন প্রাপ্তি মিষ্টি খেতে অনীহা প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে লোকজন একটি পলিথিনে থাকা বিষাক্ত কিছু জোর করে তার মুখে ঢেলে দেয়। তখন সে কোনমতে ওই স্থান থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। আশেপাশের লোকজন বিষয়টি দেখে ফেলায় ওই যুবকরা প্রাইভেটকারে করে দ্রুত রেল গেটের দিকে পালিয়ে যায়। প্রাপ্তি বিষয়টি মোবাইলে তার বাবা ওয়াজেদ আলী খোকনকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে। প্রথমে তাকে শহরের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানান, আমরা প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবার থেকে জেনেছি ৩ জন যুবক এসে প্রাপ্তিকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে। বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সাত খুনের মামলা পরিচালনার কারণেই কী এ ধরনের ঘটনা কী না জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সাত খুনের মামলার কারণে মিষ্টি খাওয়ানোর নামে বিষ খাওয়ানেরা চেষ্টা করা হয়। তবে পুরো বিষয়গুলো আমরা তদন্ত করে দেখছি। তদন্তের আগে স্পষ্ট করেই বলা যাচ্ছে না।’ এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার একেএম তারেক জানান, প্রাপ্তিকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানো হয়েছিলো। সেটা ইতিমধ্যে ওয়াশ করা হয়েছে। এখন অবস্থা শংকামুক্ত।