সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী জাকার্তায়

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এশিয়ান-আফ্রিকান দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে (জাকার্তা সময়) প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট সুকর্ণ হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ইন্দোনেশিয়ার বন ও পরিবেশ মন্ত্রী নুরবায়া বাকার। এর আগে সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সুকর্ণ হাত্তা বিমানবন্দরে ইন্দোনেশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে স্টেটিক গার্ড অব অনার প্রদান করে।

আজ বুধবার জাকার্তার বালাই সিদাং কনভেনশন সেন্টারে শীর্ষ সম্মেলনটি শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। তিনি তার ভাষণে শান্তি, নিরাপত্তা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন দ্রুততর করতে দক্ষিণ-দক্ষিণ ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করবেন। সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের দু মহাদেশের জনসংখ্যার দু-তৃতীয়াংশের জীবন-জীবিকা ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে পড়ার বিষয় উত্থাপন করবেন। একই সাথে তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক খাতের উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্যের কথাও তুলে ধরবেন। প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্লেনারি সেশন-৪-এ সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি অন্য রাষ্ট্র প্রধান ও সরকার প্রধানের সাথে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ও ফার্স্ট লেডি ইরিয়ানা জোকো উইদোদোর জাঁকজমকপূর্ণ নৈশভোজে যোগ দেবেন। শেখ হাসিনা সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিয়েন শিয়ান, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লী সিয়ানলুং, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী ড. রামি হামদুল্লাহ এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। আগামী ২৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির বিকাশে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা জোরদারকরণ।’ চীনের প্রেসিডেন্ট ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীসহ ২৮টি দেশের রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধান এ সম্মেলনে যোগ দেবেন। এশিয়ান-আফ্রিকান মহাদেশের ৬৬টি দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

পূর্ব এবং পশ্চিম এ দু ব্লকের স্নায়ুযুদ্ধের পটভূমিতে ১৯৫৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার বানদুং শহরে প্রথম এশিয়ান-আফ্রিকান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসেইন ভূইঞা, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, পুলিশের মহাপরিদর্শক, কূটনৈতিক কোরের প্রধান এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ।