সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের ষড়যন্ত্র : মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীতে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারিকে বিএনপিকে ছাড়াই একতরফা নির্বাচন করার এবং গণতন্ত্র হত্যার চক্রান্ত বলে আখ্যায়িত করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক চলাকালে সেখান থেকে বের হয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান।

ফখরুল বলেন, সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি সরকারের একটি অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এর মাধ্যমে তারা বিরোধীদলের আন্দোলনকে দমানোর চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত থেকে প্রমাণ হয়, তারা বিরোধীদলকে স্বাভাবিক কাজ করতে দেবে না। বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে তারা একরতফা নির্বাচন করতে চায়। এটি তার চক্রান্তেরই অংশ বলে আমরা মনে করি। দলের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি ফের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দেন। এর আগে সন্ধ্যায় বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের চরম অগণতান্ত্রিক এ সিদ্ধান্তে বিরোধীদলের ওপর দমন-পীড়নের আরো একটি অধ্যায় যুক্ত হলো। আজ রোববার অনুষ্ঠেয় পেশাজীবী এবং ২৫ অক্টোবর ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশকে বানচাল করার জন্যই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ধরনের একদলীয় সরকার-ব্যবস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষা তারা আগেও করেছে; কিন্তু পরিণতি হয় ভয়াবহ, সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে জনগণের কাছে চূড়ান্তভাবে ধিকৃত হয়। তিনি বলেন, এখন জনগণ নয়, এরা নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পুলিশ নির্ভর হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে বিএনপি জানিয়েছে, ২৫ অক্টোবর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, পল্টন ময়দান কিংবা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে দলের পক্ষ থেকে গতকাল ঢাকা মেট্টোপলিটান পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দেয়া হয়েছে।

এদিকে, গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশমাতৃকা পরিষদ আয়োজিত গণতন্ত্র ও বাংলাদেশ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সরকার দ্বিমুখি আচরণ করছে। সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। আলোচনার সব দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে। একদিকে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা ও রক্ষার কথা বলছেন, নির্বাচনকালীন সময়ে দলীয় সরকারের অধীনে সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছেন। অন্যদিকে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। অবস্থাটা এমন যে, ঘরের সবগুলো দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
গণতন্ত্রের পরিপন্থি পদক্ষেপ: প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সমালোচনা করে বলেছেন, যেভাবে সরকার রাজনৈতিক অধিকার হরণের চেষ্টা করছে, তা গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করার শামিল। একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি আগামী ২৫ অক্টোবর ঢাকায় এক বড় জনসভা করার পরিকল্পনা করছিলো। বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে কথা বলা হয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে।