শিশু রোগী রাজশাহী নিতে হবে বলে মোবাইলফোনে ডেকে নিয়ে প্রভাতী স্কুলের পেছনে মেরে ধরে ছিনতাই

চুয়াডাঙ্গায় অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের রোশানলে স্বস্তায় ভাড়া মারা অ্যাম্বুলেন্স চালক মনির
স্টাফ রিপোর্টার: রোগী বহনের জন্য স্বস্তায় অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দেয়ায় অব্যাহত হুমকির পর কৌশলে ডেকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা চক্ষু হাসপাতালপাড়ার মনির হোসেন মনিরকে (৩২) বেদম প্রহর করা হয়েছে। গতরাত সাড়ে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা প্রভাতী স্কুলের পেছনে নিয়ে তাকে মারপিট করা হয়। কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পাশাপাশি মোবাইলফোনটি হাতিয়ে নেয় তারা। তবে যে নম্বর থেকে তাকে ডেকে নিয়ে মারধর  করা হয় সেই নম্বরটি মুছে তা ফেরত দেয়া হয়েছে।
চরম আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ায় মনির হাসপাতালে চিকিৎসা নিতেও সাহস পায়নি। ওষুধ কিনে বাড়ি ফিরে রাতভর তাকে কাতরাতে হয়েছে।  থানায় নালিশ করারও সাহস পাচ্ছে না। মনির বলেছে, হাসপাতাল এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট রোগী জিম্মি করে  মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণেই আমাকে এভাবে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। যারা নির্যাতন করেছে তারা ওই অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের ভাড়াটে গু-া।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকায় বেশ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ায় দেয়ার ব্যবসা শুরু করেছেন।  চক্ষু হাসপাতালের অদূরবর্তী গুলশানপাড়ার মাদার বকসের ছেলে মনির নিজেও অ্যাম্বুলেন্স চালক। তিনি নিজে ওই সিন্ডিকেটভুক্ত না হয়ে তুলনামূলকভাবে অন্যদের তুলনায় এক দু হাজার টাকা ভাড়া কমে রোগী বহনের পাশাপাশি অল্প টাকায় অন্যের অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দেন। এর বিনিময়ে শুধু বকশিসই নয়, কমিশনও পান। ওই মনিরের কারণে হাসপাতাল এলাকার অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট চড়াদামে ভাড়া মারতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো। গতকাল সকালেও এক রোগী বহনের জন্য তুলনামূলক অল্প টাকায় ভাড়া ঠিক করে দিলে সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারি কলেজের সামনে বাধা হয়েও দাঁড়ান। এরপরই হুমকি রূপ নেয় হামলায়।
মনির বলেছেন, সন্ধ্যার পর একটি মোবাইলফোন থেকে যার শেষের নম্বর ৯০০ আমাকে ফোন করে বলে এক শিশু রোগীকে রাজশাহী নিতে হবে। মা ক্লিনিকের সামনে আসতে হবে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মা ক্লিনিকের সামনে গেলে ওরা মদিনা ক্লিনিকের সামনে যেতে বলে। সেখানে গেলে প্রভাতী স্কুলের পাশের গলিতে ডেকে নেয়। সেখানে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করতে থাকে। কাছে থাকা দেড়শ টাকা ছিনিয়ে। মারপিট করার সময় বলে, বড় দালাল হয়েছিস? দালালি ছুটিয়ে দেবো ।
নির্মমভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েও মনির হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সাহস না পেয়ে বাড়ি ফেরে। থানায় নালিশও করেনি। গতরাতে ঘটনার বণর্না জানার সময় থানায় নালিশ করবে কিনা জানতে চাওয়া হলে মনির বলেন, ওই সিন্ডিকেট যাদের টাকা দিয়ে পোশে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে কি মরবো?