লাশ চুরির ভয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্বজনরা

চুয়াডাঙ্গা বালিয়াকান্দির গৃহবধ ছামিয়া বজ্রপাতে মৃত্যু : দাফন

 

DSC09776

বালিয়াকান্দি থেকে ফিরে খাইরুজ্জামান সেতু/আলম আশরাফ: বজ্রপাতে মারা গেলে নিহতের শরীরে ধাতব পদার্থ পাওয়া যায়। গ্রামে প্রচলিত এ গুজবের কারণে লাশ চুরির ভয়ে বজ্রপাতে নিহত গৃহবধূর লাশ দাফনের পর চুরির ভয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন তার স্বজনরা। তারপরও থেমে নেই লাশ চুরি হওয়ার গুজব। কেউ বলছে মাথা কেটে নিয়ে গেছে, আবার কেউ বলছে পুরো লাশটাই হাওয়া হয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বালিয়াকান্দি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের মুখে এরকমই গুজব শোনা যায়।

পারিকবারিক সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মাবিলা ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি শেখপাড়ার হাফিজুর রহমান বুদোর স্ত্রী ছামিয়া খাতুন (৩৩) গত ১৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে গরুর খাবার দিতে গিয়ে একটি গরুসহ বজ্রপাতে তিনি মারা যান। পরদিন গ্রাম্যকবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, বজ্রপাতে মৃত ব্যক্তির শরীরে নাকি মূল্যবান ধাতব পদার্থ পাওয়া যায়। ওই গৃহবধূর লাশ দাফনের পর থেকে এলাকায় লাশ চুরির গুজব ছড়িয়ে পড়ে। লাশ চুরি না হলেও এখন রাত জেগে পাহারা করতে হচ্ছে নিহত গৃহবধূর স্বজনদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শহীদ সোহরাওযার্দী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক শাহেদ আরাফাত মাথাভাঙ্গাকে বলেন, অনেকে মনে করেন, বজ্রপাতে মৃত ব্যক্তির শরীরে ম্যাগনেট জাতীয় মূল্যবান ধাতব পদার্থ পাওয়া যায়। আবার কেউ কেউ মনে করেন, লাশের হাড়গোড় জাদুবিদ্যায় ব্যবহার করা যায়। এ দৃষ্টিকোণ থেকে লাশ চুরি করা হয়। ইলেকট্রিক শক বা বজ্রপাতে মারা যাওয়া একই ধরনের মৃত্যু। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ ধরনের কোনো কথা নেই যে, এভাবে মারা গেলে তার শরীরের ধাতব পদার্থ তৈরি হয়ে থাকে। এগুলো আসলে গুজব। এর মাধ্যমে অপরাধী চক্র লাশ চুরি করে প্রতারণা করে থাকে। তাই এসব গুজবে কান না দেয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।