র‌্যাবের সেই ৩ কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা মিলেছে

স্টাফ রিপোর্টার:নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাতজনকে অপহরণ ও পরে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তারই সম্পৃক্ততা মিলেছে। আগেই র‌্যাব-১১’রতত্কালীন কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মাহমুদ ও মেজর (অব.)আরিফ হোসেনের সম্পৃক্ততার কথা আদালতকে জানিয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবিরপরিদর্শক মামুনুর রশীদ মণ্ডল। আর গতকাল রোববার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকেজানালেন গ্রেফতার হওয়া র‌্যাবের অপর কর্মকর্তা লে. কমান্ডার (অব.) এমএমরানাও এ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত। তাই নতুন করে গতকাল তাকে আদালতে হাজির করে১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকেহাইকোর্টের আদেশে গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল নারায়ণগঞ্জের সাবেক জেলাপ্রশাসক মনোজ কান্তি বড়াল ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদকরেছেন।

এমএম রানাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদনে তদন্তকর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মামুনুর রশীদ মণ্ডল বলেছেন, সাক্ষ্য প্রমাণে এটাপ্রতীয়মান যে, রিমান্ডে থাকা র‌্যাবের সাবেক দু কর্মকর্তা সাত খুনের সাথেসম্পৃক্ত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদেও ইতোমধ্যে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়াগেছে। র‌্যাবের অপর কর্মকর্তা এমএম রানারও এ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকারতথ্য মিলেছে। তবে সাতজনকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ নদীতে ডুবিয়ে দেয়াতিনজনের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এর সাথে আরো কারা জড়িত তাদের শনাক্ত ওগ্রেফতারের জন্য রানাকে আরো রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাইহত্যা মামলায় রানাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তার ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগের‌্যাবের অপর দু কর্মকর্তাকেও দ্বিতীয় দফায় ৮ দিন করে রিমান্ডে নেয়ার সময়আবেদনে একই কথা বলেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা।

গতকাল বিকেল সোয়া ৫টার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় রানাকেনারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কেএম মহিউদ্দিনের আদালতে হাজিরকরা হয়। এ আদালতে প্রায় ২০ মিনিট শুনানির পর ৫টা ৩৫ মিনিটে বিচারক তার ৮দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে আবারো কঠোর নিরাপত্তায় রানাকে নারায়ণগঞ্জপুলিশ লাইনে নেয়া হয়। এ সময় আদালতে উপস্থিত বিভিন্ন সময়ে গুম ও অপহরণেরঘটনায় ভুক্তভোগী লোকজন রানাকে গালাগাল ও জুতো নিক্ষেপ করে। রিমান্ডশুনানিতে এদিনও রানার পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। আদালতে শুনানিরসময়েও রানা কোনো ধরনের বক্তব্য দেননি। এর আগে গত ২২ মে একই মামলায় তারেকসাঈদ ও আরিফ হোসেনকে গ্রেফতার দেখানোর পর তাদের আবারো দ্বিতীয় দফায় ১০দিন করে রিমান্ড আবেদন করলে সেদিন আদালত ৮ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত, সাত খুনের ঘটনায় এমএম রানাকে গত ১৭ মে গভীর রাতে ঢাকার সেনানিবাস এলাকাথেকে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। ১৮ মে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতারদেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তাকেজেলা পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদ করে উচ্চ পর্যায়ের ১২ সদস্যের বিশেষ টিম।র‌্যাব-১১ এ নারায়ণগঞ্জ শহরের পুরাতন কোর্ট ক্যাম্পের অধিনায়ক ছিলেন এমএমরানা। সেখানেই সাতজনকে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেছেন নিহত নজরুল ইসলামেরশ্বশুর শহীদুল ইসলাম।