রয়েল এক্সপ্রেস ও দুটি ট্রাকে দুঃসাহসিক ডাকাতি : মারধর লুটপাট

চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কে বণ্ডবিলে গাছ ফেলে ২০ মিনিট ধরে ডাকাতদলের তাণ্ডব

 

স্টাফ রিপোর্টার: আবারও ডাকাতির কবলে পড়েছে রয়েল এক্সপ্রেস। গতরাতে আলমডাঙ্গার বণ্ডবিলে রয়েল এক্সপ্রেস ও ট্রাকে ডাকাতি হয়েছে। ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া নৈশকোচ রয়েল এক্সপ্রেস ও দুটি ট্রাকে ২০ ধরে ডাকাতরা তাণ্ডব চালায়। বাসযাত্রীদের কাছ থেকে সমস্ত মালামাল লুটপাট করে সটকে পড়ে তারা। গতরাত ১১টার দিকে রোয়াকুলি-বণ্ডবিলের মাঝামাঝি প্রধান সড়কে গাছ ফেলে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা বাসযাত্রীদের বেধড়ক মারপিট করে আহত করে। আহতদের মধ্যে বাসের একজন মিস্ত্রিও আছেন। টহল পুলিশ প্রধান সড়ক থেকে ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতির সাথে সাথে থানা পুলিশকে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। সুপারভাইজারের অভিযোগ খবর পেয়ে সাথে সাথে পুলিশ সাড়া দিলে ডাকাতরা ধরা পড়তো।

জানা গেছে, রাত ১০টা ৫০ মিনিটে আলমডাঙ্গা কাউন্টার থেকে রয়েল এক্সপ্রেসের একটি কোচ (ঢাকা মেট্রো ব ১৪-৬৮৩৪) ১৭ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা প্রধান সড়কের বণ্ডবিল-রোয়াকুলির মাঝামাঝি স্থানে ডাকাতরা রাস্তার গাছ ফেলে রাখে। ফলে রয়েল পরিবহনটি এসে সেখানে থামতে বাধ্য হয়। সাথে সাথে ধারালো অস্ত্র হাতে তিন ডাকাত বাসের ভেতর ঢুকে যাত্রীর মারধর ও লুটপাট করতে থাকে। দু মহিলাসহ যাত্রীদের নিকট থেকে গয়নাগাটি, টাকা পয়সা ও মালামাল লুটপাট করে। পরে একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট ১১-০০৬৬) এসে থামলে তাতেও ডাকাতদল হানা দিয়ে অস্ত্রশস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি করে। প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীরা জানায়, এরপর আরো একটি ট্রাকে ডাকাতি করে ডাকাতরা। প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীরা জানান, ১০/১২ জন ডাকাত রয়েল পরিবহনে ডাকাতি করে। তবে অন্যরা বাইরে অবস্থান নিলেও তিন ডাকাত ভেতরে ঢুকে নির্বিঘ্নে মারধর ও লুটপাট চালায়।

রয়েল এক্সপ্রেসের সুপার ভাইজার মানিক অভিযোগ করেন, রাস্তায় গাছ ফেলা দেখে সাথে সাথে আলমডাঙ্গা কাউন্টারের মোজাফফর আলী মনার কাছে ফোন দিই। মনা সাথে সাথে ফোন দেন থানা পুলিশের কাছে। কিন্তু ডাকাতরা প্রায় ২০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চালায়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। তিনি আরো অভিযোগ করেন, আলমডাঙ্গা বাসটার্মিনালের কাছে টহল পুলিশের সাথে আমাদের দেখা হয়। আর কিছুক্ষণ টহল পুলিশ সড়কে থাকলে ডাকাতির ঘটনা ঘটতো না। তাছাড়া আমাদের গাড়ি পাস না করে দিয়ে কেন টহল পুলিশ ফিরে এলো। পুলিশের ওপর সন্দেহ করে তিনি জানান, ডাকাতরা যাত্রীদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া গয়নাগাটি ও মালামালও নিয়েছে অনেক টাকার। তবে ডাকাতরা কারোর মোবাইলফোন নেয়নি। এ সময় ডাকাতরা কয়েকজন যাত্রীকে বেধড়ক মারধর করে। এর মধ্যে বাসের মিস্ত্রি কবির হোসেনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানার ওসি মনির উদ্দিন মোল্লা দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান, সুপার ভাইজারের অভিযোগ সঠিক নয়, আমরা খবর পেয়ে ৩ থেকে ৪ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। আমাদের পিকআপের আলো দেখে ডাকাতরা পালিয়ে যায় বলে বাসের কয়েকজন যাত্রী আমাদের বলেছেন। তাছাড়া সব মিলিয়ে ১০ যাত্রীর কাছ থেকে হাজার দশেক টাকা নিয়েছে ডাকাতরা।  গতরাত ১২টার দিকে ডাকাতিতর কবলে পড়া রয়েল এক্সপ্রেসটি চুয়াডাঙ্গা কাউন্টারে এসে থামে। এ সময় যাত্রীরা পুলিশের বিরুদ্ধে নানা রকম মন্তব্য অভিযোগ করতে থাকেন।

প্রসঙ্গত, রয়েল এক্সপ্রেসের একটি নৈশ্যকোচ ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে ছেড়ে আসার সময় গত ৩১ সেপ্টেম্বর রাতে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের চুয়াডাঙ্গার ভুলটিয়ামোড়ের অদূরে ডাকাতের কবলে পড়ে। ওইদিন ডাকাতরা প্রায় আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।