রোগী বহনের কথা বলে নাটকীয় কায়দায় অটো নিয়ে চম্পট দু প্রতারক

দিশেহারা চালক শিমুলসহ তার পরিবার ॥ প্রতারক পাকড়াওয়ের ভরসা এখন হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা
স্টাফ রিপোর্টার: ধার-কর্য করে দেড় লাখ টাকা দিয়ে কেনা ইজিবাইক আড়াই দিনের মাথায় কৌশলে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছে দু প্রতারক। অভিনব কৌশলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে চালক শিমুলকে বোকা বানিয়ে ইজিবাইক নিয়ে সটকে পড়ে প্রতারকরা। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরাই এখন প্রতারক পাকড়াওয়ের মূল ভরসা।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শঙ্করচন্দ্র দোহারপাড়ার দাউদ আলীর ছেলে শিমুল (১৮) গত বৃহস্পতিবার ব্যাটারিচালিত ইজিহবাইক বা অটোরিকশা কেনে। ভাড়া মারার জন্য গতকাল রোববার জেলা শহরের শহীদ হাসান চত্বরে অবস্থান করছিলো। দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে দু প্রতারক ইজিবাইক চালকের সাথে মোটা অঙ্কের টাকায় হাসপাতাল থেকে রোগী বহনের বন্দোবস্ত করে। দু প্রতারক ওর ইজিবাইকযোগে হাসপাতালে পৌঁছুয়। একজন মাজায় ব্যথা বলে ইজিবাইকেই বসে থাকে। অপরজন চালক শিমুলকে সাথে নিয়ে রোগীসহ রোগীর সাথে থাকা বালিস-কাঁথা আনার জন্য হাসপাতালের দোতলায় ওঠে। প্রতারক দূরে দাঁড়িয়ে শুয়ে থাকা রোগী দেখিয়ে বলে, ওই রোগীই আমাদের। আপনি একটু অপেক্ষা করুন। আমি ডাক্তারসহ অন্যদের সাথে কথা বলার কাজটা সেরে নিই। শিমুলের সন্দেহ হয়। সে নিচে নেমে দেখে ইজিবাইকটা নেই। নেই তো নেই। দ্রুত দোতলায় ফিরে দেখে সেই ব্যাকব্রাশ করে চুল আঁচড়ানো হালকাগড়নের উজ্জ্বল বর্ণের লোকটাও নেই। খোঁজাখুজি করেও শেষ পর্যন্ত দু প্রতারকের সন্ধান মেলেনি। এরপরই তাকে আশ্বস্ত করে স্থানীয়দের অনেকেই বলেন, ভয় নেই। সিসি ক্যামেরায় ওদের ছবি আছে। আজ রোববার ও কাল সোমবার সরকারি ছুটি। মঙ্গলবার সিভিল সার্জন অফিসে থাকলে পুলিশ ডেকে সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত অংশ দেখে প্রতারক শনাক্ত করা হবে। যদিও এর আগে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে এক বৃদ্ধা রোগী দু নারী ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে গলায় থাকা সোনার চেন হারান। পুলিশ সেই দু নারীর ছবি সিসি ক্যামেরা থেকে সংগ্রহ করলেও দীর্ঘদিনে তাদের ধরতে পারেনি। এরপর জীবননগরের এক বহিরাগত ব্যক্তি সাপে কাটা শিশুকন্যা নিয়ে হাসপাতালে এসে এক প্রতারকের খপ্পরে পড়ে টাকা হারান। ওই প্রতারকের ছবি পত্রস্থ হলেও তার টিকি ছুঁতে পারেনি পুলিশ। এবার অটো নিয়ে চম্পট দেয়া দু প্রতারককে কি পুলিশ ধরতে পারবে? প্রতারকের ছবি শুধু হাসপাতালের সিসি ক্যামেরায় নয়, শহীদ হাসান চত্বরের ক্যামেরাও তো ধরা পড়েছে। পুলিশ ইচ্ছে করলে পুলিশের কন্ট্রোলরুমের ডিভিআর থেকেও তো প্রতারকের ছবি শনাক্ত করে দ্রুত ধরার উদ্যোগ নিতে পারে। যদিও গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ছবি দেখেই প্রতারক ধরা সম্ভব হবে ভরসায় শিমুল বাড়ি ফিরেছে। ইজিবাইক না পেলে দরিদ্র পরিবারের উদীয়মান ছেলে শিমুল দায়-দেনা পরিশোধ করবে কীভাবে? এ প্রশ্নে তার পরিবারের সদস্যরাও এখন দিশেহারা।