রুপাকে সুজন ছুরি মারে পেছনে দাঁড়িয়ে : ফুঁসফুঁস কেটে অল্প সময়ই মারা যায় সে

দর্শনায় স্বামীর হাতে বিউটিশিয়ান রুপা খুন মামলা :সুজনের পিতামাতা ও ভাইকে আদালতে সোপর্দ

 

দর্শনা অফিস: দর্শনা ইসলাম বাজারের বিউটিশিয়ান রুপাকে তার পেছনে দাঁড়িয়ে ডান দিকে ছুরিকাঘাত করে ঘাতক। ছুরিটি রুপার ডান দিকে কলাবোনের পাশ দিয়ে গিঁথে কেটে যায় ফুঁসফুঁস। এতেই মারা যায় রুপা। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে এরকমই তথ্য পেলেও ধরতে পারেনি রুপার স্বামী সুজনকে। সে আত্মগোপন করেছে। ঘটনার পরপরই প্রতিবেশী দেশে পাড়ি জমিয়েছে বলে দর্শনায় জোর গুঞ্জন থাকলেও দায়িত্বশীলদের অনেকেই তা বিশ্বাস করতে নারাজ। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ঠিকানাসহ সম্ভাব্য স্থানগুলোতে পুলিশি অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার দর্শনা ইশ্বরচন্দ্রপুর স্কুলপাড়ার খবির উদ্দীনের মেয়ে রুপা প্রথম স্বামী ও সন্তান নিয়ে ভালোই ছিলো। আজিমপুরের নুরু শেখের ছেলে ফুলব্যবসায়ী সুজনের পরকীয়ায় জড়িয়ে স্বামী সন্তান ছেড়ে শেষ পর্যন্ত প্রাণটিও হারাতে হলো তাকে। গতপরশু রোববার বিকেলে দর্শনা ইসলামবাজারস্থ নিজ বিউটি পার্লারে রুপা তার স্বামীর নৃশংসতার শিকার হওয়ার পর স্থানীয়রা এরকমই মন্তব্য করে বলেছে, সুজন শুধু উচ্চভিলাসিই নয়, সে বহুগামী। আনুমানিক ৮ মাস আগে সুজন ওই রুপাকে বিয়ে করে। সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য সুজন কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করে। কয়েক লাখ টাকা হারায় সে। এরপর সে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানোর জন্য রাস্তা খুঁজতে থাকে। টাকা দেবে কে?চতুর সুজন তার স্ত্রী রুপার কথা গোপন রেখে ঢাকা বিক্রমপুর এলাকায় বিয়ে করে। বিয়ে করে টাকা নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানোর জন্য মেতে ওঠে। এদিকে রুপা জেনে যায় তার স্বামী সুজনের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ বেড়ে যায়। গতপরশু রোববার বেলা আড়াইটার দিকে বিউটি পার্লারে স্বামী স্ত্রীর বাগবিতণ্ডা শোনা যায়। কিছুক্ষণের মাথায় রুপার চিৎকার। রক্তাক্ত রুপাকে নিয়ে তার স্বামী চিকিৎসকের নিকট যাওয়ার ভান করে। পথিমধ্যে রুপা মারা গেছে দেখে সটকে পড়ে সুজন। পরে অবশ্য রুপার লাশ দেখতে গিয়ে সুজনের পিতা-মাতা ও ভাই ক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে। পরে পুলিশ এদের উদ্ধার করে। শেষ পর্যন্ত রুপা খুন মামলায় এদেরকে আসামি করা হয়। ফলে পুলিশ গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল সোমবার আদালতে সোপর্দ করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডেরও আবেদন করেছে পুলিশ। সুজনকে ধরতে পুলিশের নানামুখি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দামুড়হুদা থানার অফিসার ইনচার্জ সিকদার মশিউর রহমান। অপরদিকে গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে রুপার লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ নেয়া তার পিতার বাড়ি ঈশ্বরচন্দ্রপুর স্কুলপাড়ায়। এ সময় স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। গোটা মহল্লায় নেমে আসে শোকের ছায়া। বেলা ১১টার দিকে বেদনাবিধুর পরিবেশে স্থানীয় গোরস্তানে রুপার লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়।