রায়ে খুশি ভারত

স্টাফ রিপোর্টার: বঙ্গোপসাগরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সমুদ্রসীমার বিবাদ নিয়েনেদারল্যান্ডসের হেগের স্থায়ী সালিসি আদালত যে রায় দিয়েছেন তাকে স্বাগতজানিয়েছে ভারত সরকার।তবে এই রায়ে কারা জয়ী, বা কারা পরাজিত তারা তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতেরাজি হয়নি দেশটির কেউ। দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে শুধু বলাহয়েছে, বহু বছরের একটা অমীমাংসিত বিরোধের নিষ্পত্তি শেষ পর্যন্ত হলো, তাতেই তারা খুশি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবর উদ্দিন বলেন, এইরায়কে আমরা মর্যাদা দিচ্ছি। রায়টি খুঁটিয়ে পড়ার এবং রায়ের তাত্পর্য ঠিক কী, সেটা বোঝার প্রক্রিয়া এখনো চলছে। তবে তার পরও ভারত মনে করে, যেহেতু এরায়ের মাধ্যমে বহু পুরোনো একটি দ্বিপক্ষীয় বিরোধের নিষ্পত্তি হলো, তাভারত ও বাংলাদেশের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শুভেচ্ছাকেই সুদৃঢ় করবে।গতকাল সোমবার সকালে দ্য হেগে ভারতের রাষ্ট্রদূত রাজেশ নন্দন প্রসাদেরহাতে সালিসি আদালত রায়ের প্রতিলিপি তুলে দেওয়ার পর থেকেই ভারতের কর্মকর্তা ওবিশেষজ্ঞরা দীর্ঘ সেই রায়ের প্রতিটি বিষয় বিশ্লেষণ করতে শুরু করেছেন।তবে এটা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়, তারা যেসমদূরত্ব নীতির ভিত্তিতে সমুদ্রসীমা নিরূপণের দাবি জানিয়ে আসছিলো, সালিসিআদালত সেটা পুরোপুরি মানেননি।

এমনকি বঙ্গোপসাগরের যে অংশটা নিয়ে দুইদেশের বিরোধ, তারও বেশিটাই পড়েছে বাংলাদেশের ভাগে। তবে তার পরও ভারতেরপক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার দাবি করা হয়েছে, রায়ে তারা মোটেই অখুশি নন।বঙ্গোপসাগরের তালপট্টি দ্বীপ নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহুদিন ধরেবিরোধ চলছে। বাংলাদেশ দ্বীপটিকে দক্ষিণ তালপট্টি ও ভারত পূর্বাশা বা নিউমুর আইল্যান্ড নামে অভিহিত করে থাকে। এ অঞ্চলটি অবশ্য ভারতের ভাগেই পড়েছে।বছরের প্রায় পুরো সময়টাই ওই দ্বীপ এখন পানির নিচেই থাকে।প্রায় অস্তিত্ববিহীন ওই দ্বীপটির অধিকার পেলেও সমুদ্রসীমা বা সাগরেএক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন নির্ধারণে তা তাদের খুব একটা সুবিধা করেছে বলেভারত প্রাথমিকভাবে মনে করছে না। কিন্তু তার পরেও ভারতের বক্তব্য, এই রায়েরপর বঙ্গোপসাগরের ওই অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করা যাবে, আশার কথাসেটাই।আকবর উদ্দিন বলেন, এই রায়ের ফলে সেখানে বাণিজ্যিক তত্পরতার পথ প্রশস্ত হবে। আর তাতে লাভবান হবে দুই দেশই।

জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন যে সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলে এতো দিনকোনো সংস্থাই তেল বা গ্যাস অনুসন্ধানের বরাত নিতে রাজি হতো না। কিন্তুএখন কোন অংশটা কোন দেশের দিকে পড়ছে, সেটা স্পষ্টভাবে চিহ্নিত হওয়ার পরএসব সংস্থা এগিয়ে আসবে আশা করা যায়।