রাজি না হওয়ায় ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে : শিক্ষকের শাস্তি দাবি

আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জের কোচিং শিক্ষক শাহিনের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জে এক কোচিং সেন্টারের পরিচালক তার ছাত্রীর পর্নো ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শিক্ষক শাহিনুর আহমেদ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। হুমকি ধামকি দিয়ে চাঁদাও চেয়েছেন তিনি। তবে ছাত্রীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ছবিতে কারসাজি করা হয়েছে। সুপার ইম্পোজিং করে ছবি ফেসবুকে ছড়ানো হয়েছে বলে তাদের দাবি। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর সাথে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের মিঠু মিয়ার ছেলে প্রান্ত হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেসময় অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি মোবাইলফোন ক্যামেরায় ধারণ করে রাখে প্রেমিক প্রান্ত। সম্প্রতি তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন দেখা দেয়। সুযোগ বুঝে প্রান্ত কিছু আপত্তিকর ছবি কলেজ ছাত্রীর কোচিং শিক্ষক শাহিনুর ওরফে শাহিনকে দেয়। শাহিন প্রথমে ওই ছবিগুলো ফেসবুকের ইনবক্সের মাধ্যমে কলেজ ছাত্রীকে দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন এবং ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এতে রাজি না হলে ছবিগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন তিনি। কলেজ ছাত্রী বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা দেয় এবং ছবিগুলো ফেসবুকে না দেয়ার অনুরোধ জানায়। একই সঙ্গে সে জানায়, ছবিগুলো পুরোপুরি তার নয়। অন্যের ছবির সঙ্গে তার ছবির মাথা জুড়ে সুপার ইম্পোজিং করা হয়েছে বলে তার দাবি। কিন্তু ছাত্রীর কথা না শুনে কয়েকদিন আগে কোচিং শিক্ষক শাহীন ফেসবুকে অনামিকা খান নামের একটি ভুয়া আইডি খুলে ছবিগুলো ছড়িয়ে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে কলেজ ছাত্রীর পিতা আলমডাঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। একই সাথে জেলা লোকমোর্চার কাছে আইনগত সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছেন এবং পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সচিব কানিজ ফাতেমা জানান, কোচিং শিক্ষক শাহিনুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে লোকমোর্চা।

গত শনিবার কলেজ ছাত্রীর আত্মীয় স্বজন ও এলাকার যুবসমাজ কোচিং শিক্ষকের সাথে ফেসবুকের ছবির সংশ্লিষ্টতা পেয়ে শিক্ষক শাহিনকে জেহালা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। এ সময় কোচিং শিক্ষক শাহিন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা আংশিক স্বীকার করেন। জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল হক রোকন ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজের উপস্থিতিতে পিতা বাড়াদী ইউনিয়নের নতিডাঙ্গা গ্রামের আতিয়ারের জিম্মায় কোচিং সেন্টারের শিক্ষক শাহিনকে তুলে দেয়া হয়। এ ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় চাঁদা দাবির অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল হক রোকন জানান, কোচিং শিক্ষক শাহিন শুধু কলেজ ছাত্রীকে অশ্লীল ছবি দিয়ে কুপ্রস্তাব ও চাঁদা দাবিই করেননি, শিক্ষকতার মতো মহান পেশাকে কলুষিত করেছেন।

এলাকাবাসী জানায়, কোচিং শিক্ষক শাহিন কর্তৃক সাবেক ছাত্রীকে অশ্লীল ছবি দেখিয়ে কুপ্রস্তাব ও চাঁদা দাবির ঘটনায় এলাকাবাসী হতবাক হয়ে পড়েছেন। এলাকাবাসী তার শাস্তি দাবি করেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোচিং শিক্ষক অভিযুক্ত শাহিন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, আপত্তিকর ও অশ্লীল ওইসব ছবি কে বা কারা ফেসবুকে ছড়িয়েছে সে ব্যাপারে কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানার ওসি আকরাম হোসেন জানান, ‘বিষয়টি আমার নলেজে আছে। মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।