যুক্তরাষ্ট্রে মহানবী (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনী স্থলের কাছে গুলিতে দু বন্দুকধারী নিহত

মাথাভাঙ্গা মনিটর: যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে গতপরশু রোববার রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্রের একটি প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানস্থলের কাছে পুলিশের গুলিতে দু বন্দুকধারী নিহত হয়েছে। নিহত দুজনের মধ্যে একজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। পুলিশের বরাত দিয়ে গতকাল সোমবার এ খবর জানিয়েছে একটি সংবাদমাধ্যম।

অনলাইনের খবরে জানানো হয়, গারল্যান্ডের কার্টিস কুলওয়েল সেন্টারে মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুনের প্রতিযোগিতার শেষ দিনে প্রদর্শিত কার্টুনের ওপর আলোচনামূলক সম্মেলন চলছিলো। পুলিশের দাবি, সম্মেলনের শেষের দিকে দু বন্দুকধারী গাড়ি নিয়ে সম্মেলন কেন্দ্রের দিকে এসে নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে আরম্ভ করে। পুলিশের পাল্টা গুলিতে তারা নিহত হয়। সম্মেলনে উপস্থিত থাকা লোকজনের ওপর হামলা করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, তাৎক্ষণিক তদন্তে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, নিহত দুজনের মধ্যে একজনের নাম এলটন সিম্পসন। তার বাড়ি অ্যারিজোনার ফিনিক্স এলাকায়। ওই এলাকায় যে অ্যাপার্টমেন্টে সিম্পসন থাকতেন সেখানে এখন তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
পুলিশ বলেছে, এর আগে সিম্পসনকে একটি সন্ত্রাস সংশ্লিষ্ট তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিলো। তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, হামলা চালাতে যাওয়ার আগের দিন সিম্পসন টুইটারে একাধিক বার্তা পোস্ট করেছেন। একটি বার্তায় তিনি বলেছেন, আল্লাহ আমাদের মুজাহিদ হিসেবে কবুল করুন। পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তিদের গাড়িতে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু আছে কি-না তা পরীক্ষার জন্য বোমা স্কোয়াড আনা হয়েছিলো। তবে তারা কোনো ঝুঁকি না নিয়ে দূর থেকেই গাড়িটিকে বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেন।

বিতর্কিত ব্লগার অ্যাকটিভিস্ট পামেলা গেলারের পরিচালিত সংগঠন আমেরিকান ফ্রিডম ডিফেন্স ইনিশিয়েটিভস (এএফডিআই) এ প্রতিযোগিতা ও সম্মেলনের আয়োজন করে। এএফডিআই যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার গ্রুপ সাউদার্ন পোভার্টি ল সেন্টারের তালিকাভুক্ত মুসলিম-বিদ্বেষী সংগঠন। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন নেদারল্যান্ডসের রাজনীতিক গ্রিট ওয়াইল্ডার্স যিনি পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই প্রতিযোগিতায় শুধুমাত্র মহানবী (সা.)-এর কল্পিত চেহারার কার্টুন আঁকেন প্রতিযোগীরা। প্রথম পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার মার্কিন ডলার দেয় আয়োজক সংগঠন। সম্মেলনস্থলে ছিলেন এমন একজন নারী বলেন, তিনি অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হতে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ গুলির শব্দ শোনেন। একজন নিরাপত্তাকর্মী তাঁকে দ্রুত ভবনের ঢুকে পড়তে বলেন। তিনি ভয়ে আবার ভেতরে চলে যান।
পুলিশ বলেছে, একজন পুলিশ কর্মকর্তার পায়ে বন্দুকধারীদের ছোড়া গুলি লেগেছে। অন্য কেউ হতাহত হয়নি।

সম্মেলনের মুখ্য আলোচক গ্রিট ওয়াইল্ডার্স ডাচ গণমাধ্যমকে পাঠানো টেক্সট মেসেজে এ ঘটনাকে মুক্তচিন্তার ওপর অগ্রহণযোগ্য হামলা বলে অভিহিত করেছেন।
আয়োজক সংগঠন এএফডিআই তাদের ফেসবুক পাতায় এটিকে, বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছে।