যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রতিদিন কুসংস্কারের অন্ধকার তাড়ানোর প্রত্যায়ে প্রকাশ পায় দৈনিক মাথাভাঙ্গা

 

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর বিশেষ প্রতিবেদন : নিজেদের অল্প-স্বল্প গুণকীর্তন

স্টাফ রিপোর্টার: আজ ১০ জুন। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ২৬ বছরে আজ পা দিলো দৈনিক মাথাভাঙ্গা। প্রতিষ্ঠার এই দীর্ঘ পথচলায় অনেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অথচ তাদের কেউ কেউ আজ বহু দূরে। পরপারেও অনেকে। প্রতিদিন সকালে পাঠকদের হাতে পত্রিকাটি পৌঁছুনোর আগে বহু শ্রম লেগে থাকে তাতে। কাদের শ্রম? যারা অন্যের সংবাদ সংগ্রহ করে পত্রিকার জন্য লেখেন, যারা তা ছাপা অক্ষরে সাজিয়ে নির্ভুল করে তোলার চেষ্টা করেন তাদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আবার ছাপা এবং ছাপার পর পত্রিকা পাঠকদের হাতে পৌঁছুনোর কাজেও নিয়োজিতদের সংখ্যাও অনেক। তাদের মধ্যে নতুন পুরোনো মিলিয়ে যারা বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের নিয়েই আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদন। যদিও সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশনের সাথে চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত প্রায় সকল সংবাদিকেরই রয়েছে কোনো না কোনোভাবে সংশ্লিষ্টতা, সহযোগিতা।

রফিকুল ইসলাম। তিনি আইনজীবী হলেও সাংবাদিকতায় নিবেদিত প্রাণ। রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয় প্রতিনিধি থেকে দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রধান প্রতিবেদক হওয়ার দক্ষতায় তিনি এক অনন্য উদাহারণ। সংবাদ সংগ্রহের পাশাপাশি তা পরিবেশনই করেন না, কোনো গুরুত্বপূর্ণ খবর যাতে বাদ না যায় সেদিকে তার সর্বাক্ষণিক নজর। আর মাথাভাঙ্গার আগাম কর্মপরিকল্পনা? তাতে তার জুড়ি মেলা ভার। বার্তা সম্পাদক আহাদ আলী মোল্লা। শিক্ষকতার পাশাপাশি সেই ছাত্র জীবন থেকেই যার সংবাদিকতা নেশা। খ্যাতিমান ছড়াকার। দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রকাশ লগ্নকালীন টিপ্পনী রচয়িতা। লিখেছেন ১৯৯১ সালের ১০ জুনের প্রথম সংখ্যায়। লিখছেন এখনো। গোটা খবর কক্ষে ছড়ি ঘোরে তার। ফাইজার চৌধুরী? সহ-সম্পাদক থেকে এখন সহযোগী প্রধান প্রতিবেদকের কেদারাটা করে নিয়েছেন নিজের। এখন আর মনিটরিং নয় খবরের সন্ধানে প্রতি মুহূর্ত যেন কান খাড়া থাকে তার। সহ-সম্পাদকের দায়িত্বে আব্দুস সালাম। শিক্ষার মানবৃদ্ধিতে যার নিরলস পরিশ্রম। ক্রীড়া প্রতিবেদক? ইসলাম রকিবকে শুধু প্রতিবেদক বললে ভুল হবে। তিনি গোটা ক্রীড়া বিভাগই শুধু সামলান না, সকল খবরের পিছু ছুটে মাথাভাঙ্গাকে সমৃদ্ধ করার স্বপ্ন লালন করেন হৃদয়ে।  স্টাফ রিপোর্টারদের মধ্যে ‘কেউ কারো নাহি ছাড়ে সমানে সমান’ মতোই প্রতিযোগিতায় মত্ত খাইরুজ্জামান সেতু, আলম আশরাফ, জহির রায়হান, উজ্জ্বল মাসুদ, জাকির মুনসাদ, রহমান রনজু, মারুক হোসেন, সাইফ জাহান ও কামরুজ্জামান বেল্টু। খাইরুজ্জামান সেতু খবরে ভিন্ন স্বাদ দেয়ায় আন্তরিক। আলম আশরাফ কচ্ছপ গতিতে হলেও খরগোশকে  হারিয়ে বিজয়ের চেষ্টায় চলছেন অবিরাম। রহমান রনজু? মাঝে মাঝে উধাও না হলে এতোদিনে পৌঁছুতো বোধ হয় বহুদূর। সাইফ জাহানের নাচন নেশা সাংবাদিকতা পেশার  অন্তরায় হলেও নির্ভুল সংবাদ পরিবেশনে আন্তরিক। উজ্জ্বল মাসুদের অগ্রযাত্রা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি হলেও ছেলের পিতা হওয়ার তৃপ্তিতে যেন সাংবাদিতকায় এনেছে পিছুটান। নাকি রাতারাতি সাংসারিক হয়ে উঠলেন তা বোঝা ভার। জাকির মুনসাদ শিক্ষা নবিস থেকে ভ্রাম্যমাণ পদাধিকারী হয়েছেন সম্প্রতি। দায়িত্বে আরও অন্তরিক হওয়ার প্রতিদিনই তাগিদ দেয় বার্তাকক্ষ। জহির রায়হান সোহাগ? দূর গ্রাম থেকে ছুটে এসে শহরের গন্ধ গায়ে মেখে কখন যে সংবাদিকদের পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন তা নিজেও বোধ হয় বুঝতে পারেননি। সম্পাদককে ভগ্নিপতি বানিয়ে নিচ্ছেন বাড়তি সুযোগ। ইংরেজিতে পাণ্ডিত্য লাভে অন্যদের টপকানোটা হয়ে উঠেছে সহজ।  আমাদের ওস্তাদ মাসুম মণ্ডল। তিনি সম্পাদকেরও ওস্তাদ। সম্পাদক সরদার আল আমিন তাকে ওস্তাদ ছাড়া ডাকেন না। সেই সুবাদে সকলের ওস্তাদ তিনি। গাড়ির ড্রাইভিঙে দক্ষ করে দেয়ায় সম্পাদকের ওস্তাদ বনে গিয়েছেন তিনি। মাঝে মাঝে জটিল কঠিন সংবাদ নিয়ে অফিসে হাজির হন তিনি। আর যারা শিক্ষানবিস হিসেবে রয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই এগিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাবনার দিকে। ঢাকা অফিসের সকল ধকল সামলান মুনসুর আহমেদ।

দৈনিক মাথাভাঙ্গা ১৯৯১ সালের  প্রথম দিকে প্রকাশেরে উদ্যোগ নেয়া হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়মিত যাত্রা শুরু হয় ওই বছরের মাঝামাঝি ১০ জুন। অসহনীয় গরমের পর বৃষ্টি বর্ষার ছোঁয়া নিয়ে দৈনিক মাথাভাঙ্গার অগ্রযাত্রায় পার হতে হয়েছে বহু ঘেরাটোপ। উপেক্ষা করতে হয়েছে বহু রক্তচক্ষু। মালিক, মুদ্রাকর ও প্রকাশক হিসেবে প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই নিয়োজিত দৈনিক মাথাভাঙ্গার স্বপ্নপুরুষ সরদার আল আমিন। তিনি বর্তমানে সম্পাদনারও দায়িত্বে নিয়োজিত। সংবাদিকদের অনন্য আদর্শ সরদার আল আমিন সম্পাদকীয় কলামেই শুধু নিজেকে গণ্ডিবদ্ধ না রেখে সব কিছুতেই বাড়তি দক্ষতায় ভরপুর। সব সময়ই তিনি শূন্যস্থান পূরণে প্রাণবন্ত পুরুষ। অপারেটরদের সাথে তালে তাল মিলিয়ে পত্রিকা প্রস্তুত করায় যেমন সিদ্ধহস্ত, তেমনই দক্ষ প্রশাসক। ভালোবাসার বাহুডোরে সকলকে আগলে রাখেন চমৎকারভাবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর ও শহরতলীতে সংবাদ সংগ্রহে স্টাফ রিপোর্টারদের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হলেও জেলা সদরের ইউনিয়ন ও আঞ্চলভিত্তিক দায়িত্ব নিয়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন যারা তাদের মধ্যে রয়েছেন বেগমপুর ও তিতুদহে নজরুল ইসলাম, আলুকদিয়ায় মনির মাহমুদ, ডিঙ্গেদহে ইলিয়াস হোসেন, বদরগঞ্জে কবির দুখু মিয়া, পদ্মবিলায় সুজন মাহমুদ। আর সরোজগঞ্জে? জিয়াউর রহমান জিয়া ভাগ্যের অন্বেষণে মালয়েশিয়ায় গেলেও ফিরে আসছেন। ফের শক্ত হাতে ধরবেন সাংবাদিকতার হাল। এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। আজ-কালের মধ্যেই তার ফেরার কথা।

আলমডাঙ্গা উপজেলার মূল দায়িত্বে নিয়োজিত রহমান মকুল। এক সময় আতিয়ার রহমান মুকুল হিসেবে লিখলেও সাংবাদিকতা করতে এসে নামের আকিকা ছাড়াই নামটা বদলে রহমান মুকল হয়ে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই তিনি বোমাঘাতে হারিয়েছেন একটি হাত। শিক্ষকতা করেন। সাংবাদিকতা করেন। বিয়ের বয়স প্রায় পেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম, অথচ ঘটক পছন্দের পাত্রীর সন্ধান দিতে পারছেন না বহুদিন ধরে। তার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তড়িৎকর্মা শরিফুল ইসলাম রোকন। হাফিজ মাস্টারের পরলোক গমনে সৃষ্ট শূন্যতা এখনও আমাদের কাঁদায়। বড় গাংনী প্রতিনিধি তারেক মাহমুদ ও খাদিমপুরের শরিফুল ইসলাম বেশ টুকটুক করে এগিয়ে যাচ্ছে। ভালাইপুরের দায়িত্বে সাইদুর রহমান মাঝে মাঝে ঝামেলা পাকিয়ে হাহুতাশে যেন ব্যস্ত। আর আনিক সাইফুল? মুন্সিগঞ্জ এলাকার দায়িত্ব সামলাতে হিমশিম হলেও কখন যে সে স্টাফ রিপোর্টার হতে প্রধান কার্যালয়কে বশ করে বসে কে জানে? জামজামি প্রতিনিধি কে এ মান্নান? বাংলায় বাড়তি দক্ষ। লিখতে গেলে কম লেখেন না। অপারেটরদের কাছে তিনি এই সেই মান্নান ভাই বলেই সমাদৃত। হাটবোয়ালিয়ার দায়িত্ব দীর্ঘদিন ধরেই সামলে আসছেন মুর্শিদ কলিন। তবে ইদানীং পত্রিকার পাতায় তার উপস্থিতি খুবই কম।

দামুড়হুদা অফিস প্রধান ছিলেন শাহাব উদ্দীন। তিনি বর্তমানে সরকারি চাকিরি করেন। ফলে প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বকতিয়ার হোসেন বকুল । তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বলেই লেখেন ভালো। অল্প দিনেই অনেক দূর। কুড়ুলগাছি প্রতিনিধি হাশেম রেজা। শিক্ষকতার পাশাপাশি পরোপকারী পুরুষ হাশেম রেজা সাংবাদিকতায়  নিবেদিত প্রাণ। কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে শরীফ রতন আর ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত মোস্তাফিজ কচি। অন্যান্য পেশার পাশাপাশি সাংবাদিকতা এদের নেশারই অংশ। আর দামুড়হুদার দর্শনা? খবরে রসদে ভরপুরসীমান্ত ঘেঁষা শিল্পনগরী দর্শনার মূল দায়িত্বে এক সময়ের সহকারী হারুন রাজু। নিরলস পরিশ্রম মাথাভাঙ্গাকে যেমন সমৃদ্ধ করে চলেছে, তেমনই তারও ভাগ্যের চাকা ঘুরছে। সহকারী ব্যুরো প্রধান হানিফ মণ্ডল। যেখানেই খবর সেখানেই হানিফ মণ্ডলের ক্যামেরা। এরকমই ধারণা এলাকাবাসীর। মোটা কাঁচের ভারী ফ্রেমের চশমা পরা হানিফ মণ্ডলের ছোটাছুটি সাংবাদিকতায় অনন্য উদাহরণ বটে।

জীবননগর উপজেলা ব্যুরো প্রধান সেই প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই মাহবুবুর রহমান বাবু। তিনি এম আর বাবু নামেই পরিচিত। শুরু থেকে ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব পালন করাই তিনি এখন মাথাভাঙ্গার যে কোনো বৈঠকে নিজেকে ব্যুরোদের বুড়ো বলে পরিচয় দিয়ে জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দেন। সঠিক নির্দেশনা কি কেউ উপেক্ষা করতে পারেন। স্বয়ং সম্পাদক তাকে মামা বলেই ডাকেন। সহকারী ব্যুরো প্রধান হিসেবে জাহিদ জীবন দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমানে তিনি অন্য পেশায় ব্যস্ত। উথলী প্রতিনিধি রজিনা খাতুন। তিনি সাংসারিক কাজে বেশিরভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকেন। এ কারণে তার স্বামী সালাউদ্দীন কাজলকেই সহকারী ব্যুরোর ধকল সামলাতে হয়। আর আন্দুলবাড়িয়া? যেমন জ্ঞানে, তেমনই বয়সে প্রজ্ঞা নারায়ণ ভৌমিক। মাথাভাঙ্গা পরিবারের কাছে তিনি আদরের নারায়ণ দা’। যা লেখেন তা হুবহু না ছাপা হলে পরিদিন তীব্র প্রতিক্রিয়া। ফলে সম্পাদনা বিভাগকে থাকতে হয় আতঙ্কে।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দৈনিক মাথাভাঙ্গা মেহেরপুরবাসীর প্রাণের পত্রিকা। শুরু থেকে অনেকেই দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যুরো প্রধান হিসেবে মহাসিন আলি দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সংবাদ পরিবেশনে আন্তরিকতায় ঘাটতি না থাকলেও বিলম্বে মেইল প্রেরণে বার্তা বিভাগ তাকে যে খেতাব দিয়েছে তা না হয় প্রতিবেদনে প্রকাশ নাই বা করা হলো! পেরেছিলেন কি ওই লেট লতিফ খেতাব মুছতে? বিদ্যালয়ের দায়িত্ব সামলান। ফলে বেশ কয়েকজন সহকারীর সহযোগিতা তো নিতেই হয় প্রবীণ এই সাংবাদিক মহাসিন আলিকে। গাংনী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব সামলান মাজেদুল হক মানিক। উপজেলা শহর গাংনীতে বসবাস করলেও মেহেরপুর জেলার ওপরই রয়েছে বাড়তি দখল। সংবাদ পরিবেশনে  নতুনত্ব আর চমৎকার বাচনভঙ্গি তাকে গুণী সাংবাদিকদের কাতারে নিয়ে গেছে অল্প সময়ে। আর আবু হোসেন? একসময় তিনিই সামলাতেন যাবতীয় দায়িত্ব। বর্তমানে তিনি শুভানুধ্যায়ীদের কাতারে। আমঝুপিতে সাদ আহম্মেদ। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার খবরই তার বেশি আসে। এ কারণে তার এলাকার খবর বাদ পড়লে প্রধান কার্যালয় থেকে অন্যদের খবরও নেয়া হয় আদর করে। যদিও মাঝে মাঝে সাদ আহম্মেদও জেগে ওঠেন মাঝ রাতে। বারাদী প্রতিনিধি আবু সুফিয়ান? ভয়তরাশে খেতাব মুছবেন কবে কে জানে? মুজিবননগর প্রতিনিধি শেখ শফি উদ্দীন। মোটরসাইকেল নিয়ে ছোটেন, ঘোরেন। গিন্নির বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সংবাদের সাথে পত্র লেখেন মনের মাধুরি মিশিয়ে। সে পত্র পাঠে পাথরও গলে সরবতে রূপ নেয়।

ঝিনাইদহ জেলাজুড়েই রয়েছে মাথাভাঙ্গার দাপট। পাঠককূলের মনের কথা বলে মাথাভাঙ্গা তাবত এলাকাবাসীর হৃদয়ের পত্রিকা হয়ে উঠেছে। ডাকবাংলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গিয়াস উদ্দীন সেতু, বাজারগোপালপুর প্রতিনিধি মনজরুল ইসলামের গোটা এলাকার সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করে একের পর এক চমক সৃষ্টি করে চলেছেন। হরিণাকুণ্ডু থেকে মাহবুব মুর্শেদ শাহীন লিখলেও খবরের চাহিদা পূরণে অন্যদের ওপর নির্ভর করতে হয় মাথাভাঙ্গার বার্তা কক্ষকে। মহেশপুর প্রতিনিধি রুহুল আমিন এখন সরকারি চাকরিজীবী। ফলে শুভানুধ্যায়ী হয়ে দাউদ হোসেনকে প্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। দাউদ  হোসেন দীর্ঘদিন ধরেই সামলে আসছেন দায়িত্ব। কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি ফারুক আহম্মেদ মুকুল, কালীগঞ্জ প্রতিনিধি শিপলু জামান। এদের সংবাদে যেমন পাঠককূলের চাহিদা মেটে, তেমনই উন্নয়নে হয় সহায়ক। এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ দায়িত্বশীলদের এরকমই অভিমত। এসব তো গেলো সংবাদ সংগ্রহ করে পরিবেশন করেন যারা তাদের কয়েকজনের চিত্র। যারা সংবাদ দিয়ে সহযোগিতা করেন তাদের তালিকা অনেক লম্বা। ঢাকা থেকে প্রকাশিত অধিকাংশ সহযোগী সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাই মাথাভাঙ্গার পরিবারভুক্ত।

সংবাদ সংগ্রহ ও লেখার পর তা ছাপা উপযোগী করে সংবাদপত্রের আকারে রূপ দিতে যারা কাজ করেন তাদের অবদান কি সাংবাদিকদের চেয়ে ছোট? অবশ্যই না। চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের অদূরেই গমপট্টি-চাল পট্টি। এর একটি সড়ক দিয়েই মাথাভাঙ্গার প্রধান কার্যালয়ে পৌঁছুতে হয়। সড়কটির নাম ইতোমধ্যেই দেয়া হয়েছে মাথাভাঙ্গা সড়ক। প্রধান কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সাথে যে কার্যালয় সেখানেই রয়েছে বিজ্ঞাপন বিভাগ। এখানেই বসেন জেনারেল ম্যানেজার হাসান আখতার সিদ্দিক পিন্টু। সকলের কাছেই তিনি পিন্টু ভাই। কাজ দেখে বেতন কাটছাঁট কিংবা বৃদ্ধিতে যার কর্তৃত্ব তার কি অন্যায় করা মানায়? কখনোই অন্যায়ের সাথে আপস করতে রাজি নন। দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রাক্তন অপারেটর বর্তমানে অন্যতম শুভানুধ্যায়ী আর্থিক সহযোগী মনিরুজ্জামান মনিরের ভাষায়, ভাগ্যিস পিন্টু ভাইয়ের মতো একজন দক্ষ মহাব্যস্থাপক পেয়েছিলাম আমরা। জেনারেল ম্যানেজারের  সহযোগীদের মধ্যে রয়েছেন বিতরণ বিভাগের প্রধান তথা সার্কুলেশন ম্যানেজার রানা মাসুদ ও সহকারী ম্যানেজার ওয়াচ কুরুনী। ছাপাখানার প্রধান তথা ছাপাখানা ব্যবস্থাপক মানিকুজ্জামান  মানিক, সহকারী হোসেন ও আকাশ। বিপণন বিভাগে সহকারী হিসেবে যেমন দায়িত্ব সামলান আনোয়ার হোসেন, তেমনই সাথে থাকেন রিপন ও ইমরান। আর অফিস সহকারীর দখল? সেটাও আনোয়ার হোসেন। তার সহকারী অবশ্য সাঈদ হোসেন। এসবতো ছাপাখানা আর বিপণন বিভাগের খণ্ডাংশের চিত্র। দৈনিক মাথাভাঙ্গার মূল দায়িত্ব তথা অপারেটর বিভাগের সব দায়িত্ব সামলাতে হয় মাহবুব রহমান, হাসান মাহমুদ সুমন ও উজ্জ্বল হোসেন। তবে মাহবুব যে কাজটুকু করেন তা দায়িত্ব নিয়ে। তাই বিজ্ঞাপন ছাপার নিভুলতার ব্যাপারে বিজ্ঞাপন বিভাগ তাকে বেশি বিশ্বাস করে। কম্পোজগুলোর শুদ্ধতা যাচাইয়ের পর ট্রেসিং প্রিন্ট হয়। সেগুলো কেটেছেঁটে সমান করে মাপ মতো সাজাতে গোছাতে ব্যস্ত সময় কাটান লিলটন। তার সহকারী বখতিয়ার হোসেন। এরপর তা পাঠানো হয় ছাপাখানায়। তারপরই একের পর এক প্রক্রিয়া শেষ করার পর মূল বাটনে চাপ দেন মানিক। ছাপা শুরু হয়। মিনেটে দেড়শরও বেশি ছাপা হয়ে ৩২ হাজার পুজতে হাসান আর আকাশকে ভোরের আগ পর্যন্ত নাকানি চুবানি খেতে হয়। এরপর তা সহকারীদের সাথে নিয়ে দূর দূরান্তে পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বিক্রয় প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেয় সার্কুলেশন বিভাগ। এ বিভাগে কর্মরতদের হাতেও সকল বিক্রয় প্রতিনিধির নামধাম রাখা প্রায় অসম্ভব।

কার্পাসডাঙ্গা অঞ্চলে এজেন্ট শাহাবুলকে কয়েকজন সহকারী সামলাতে হয়। জুড়ানপুর এলাকার দায়িত্ব পালন করেন শফিকুল, দামুড়হুদায় রয়েছেন এজেন্ট শাহীন ও আছির, দর্শনায় এজেন্ট হারুন রাজুকে সামলাতে হয় কয়েকজনকে সাথে নিয়ে। তার রয়েছে ১০ জনের অধিক বিক্রয় প্রতিনিধি। আন্দুলবাড়িয়ার দায়িত্ব নাসির উদ্দনের ওপরই। জীবননগরে এজেন্ট জাকির হোসেন পরিচালন করেন কমপক্ষে ৮ জন বিক্রয় প্রতিনিধিকে। মনোহরপুরের দায়িত্বে আসাদ, কালীগঞ্জের দায়িত্ব শিপলু, কোটচাঁদপুরেও ফারুক হোসেন, বারাদীতে দায়িত্ব সামলান আলমগীর হোসেন, ডিঙ্গেদহ এলাকার দায়িত্বে বিল্লাল, সরোজগঞ্জের এজেন্ট মোতালেব হোসেনের অধীনে প্রতিনিধির সংখ্যা প্রায় ৫ জন। মুন্সিগঞ্জের এজেন্ট আলী হোসেনও পরিচালনা করেন কয়েকজন বিক্রয় প্রতিনিধি। আলমডাঙ্গার বিশাল এলাকার সিংহভাগই সামলাতে হয় এজেন্ট তুষার, সেলিম হোসেন ও সাইফুল ইসলাম উলুকে। জাহিদুল ইসলামও আলমডাঙ্গার একাশং সামলান। মেহেরপুরে? কিছু অংশের এজেন্ট হামিদ আলী সামলান গুরুদায়িত্ব। তার রয়েছে বহু বিক্রয় প্রতিনিধি। মেহেরপুরের বড় দায়িত্বে রয়েছেন এজেন্ট মহাসিন আলী। তিনি ৬/৭জন বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে মেহেরপুরে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পৌঁছে দেন পাঠকদের হাতে। মুজিবননগরে শফি উদ্দীন সামলান সহকারীকে সাথে নিয়ে। হাসাদহে আলামিন, ঘোলদাঁড়িতে রিন্টু যেমন অঞ্চলভিত্তিক পত্রিকা পাঠকের হাতে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব পালন করেন তেমনই চুযাডাঙ্গায় দায়িত্ব পালনকারীরে মধ্যে রয়েছেন রিন্টু, কৃষ্ণ, রুস্তম, এজেন্ট আরিফুল, আব্বাস, রাসেল, রানান, শফি, ইমাম, ছাবদুল, ডালিম হোসেন তার সহকারী, সুজন আলী,  বিপ্লব, ইছামুল, এজেন্ট মোমিন, এজেন্ট আনিসসহ তার কয়েক সহকর্মী,  জুয়েল, বিপ্লব, নয়ন, এজেন্ট লাইলী ও তার কয়েক সহকর্মী, হাসান, এজেন্ট মিনাজসহ তার কয়েক সহযোগী, মুক্তা, সেলিম, সুজন ও হিরাসহ অনেকে।

এতোগুলো মানুষের নিরলস পরিশ্রমে প্রতিদিন দৈনিক মাথাভাঙ্গা পাঠকদের হাতে পৌঁছায়। এছাড়াও অনলাইন সংস্করণের বদৌলতে প্রতিদিন বিশ্বের প্রায় সব দেশেই দৈনিক মাথাভাঙ্গার অসংখ্য পাঠক মাথাভাঙ্গা পড়ে থাকেন। অনলাইন সংস্করণ প্রতিদিন আপলোড করতেও শ্রম দিতে হয় বেশ কয়েকজনকে। দৈনিক মাথাভাঙ্গার আজ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। সকলকে শুভেচ্ছা। সকল পাঠক দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবারের পাশে থাকবেন এটাই প্রত্যাশা।