যাত্রাপালা এখন যেন শুধু স্মৃতি : দামুড়হুদার ভগিরথপুরে মঞ্চায়িত হয় যাত্রাপালা বিজয় বসন্ত

তৌহিদ তুহিন: যাত্রাপালা লোক সাহিত্যের একটি বিরাট অংশ নিয়ে বিরাজমান। জমকালো নবাবী পোশাকে ও ভরাট গলার আওয়াজ কিংবা সুরেলা গানের কলি এখন আর শোনা যায় না গ্রামের যাত্রা প্যান্ডেলের মঞ্চে। বিগত দিনগুলোতে গ্রামের মানুষ উন্মুখ হয়ে থাকত তাদের বিনোদনের একমাত্র খোরাক গ্রামের যাত্রাপালা অনুষ্ঠানের জন্য। আর সেই কথা চিন্তা করে দামুড়হুদার ভগিরথপুর গ্রামের যুব সমাজের উদ্যোগে বিজয় বসন্ত যাত্রাপালা মঞ্চায়িত হয়েছে।
গতকাল বধুবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভগিরথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মুকুল মিয়া প্রযোজিত সুমন মিয়ার পরিচালনায় মঞ্চায়িত হয় বিজয় বসন্ত যাত্রাপালা। এলাকার মানুষের বিনোদনের জন্য ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় এ যাত্রাপালা।
কালের আর্বতে গ্রামে সিডি, ডিভিডি, ডিশলাইন চললেও যাত্রানুরাগীরা কিন্তু ভুলতে পারছে না যাত্রাগানের কথা। আর বর্তমানে আর্থিক মুনাফার জন্য যাত্রাদলে অতিমাত্রায় অশ্লীলতা যোগ করায় হারিয়ে যাচ্ছে এ শিল্প। মাত্র তিনদশক আগেও যাত্রা দেখে মনোরঞ্জনের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকতো গ্রামের মানুষ। বড় খেলার মাঠে টিন অথবা চাঁচ দিয়ে ঘিরে ওপরে বিশাল সামিয়ানা টাঙিয়ে বানানো হতো প্যান্ডেল। কয়েকটি গেট বানানো হতো দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য। টিকিট ছিঁড়ে ছিঁড়ে ঢোকানো হতো একেক করে। সারারাত ধরে চলতো যাত্রাপালা।
বিরতির মাঝেমধ্যে নৃত্য। বাইরে বসতো বাদাম, পাপর ভাজা, ঝালমুড়ির দোকানসহ অনেক দোকান। এক অন্যরকম আনন্দে মেতে উঠত গ্রামের মানুষ। কিন্তু সে সবই এখন স্মৃতি হয়ে গেছে সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষদের কাছে। আর সে স্মৃতিকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে ভগিরথপুরে মঞ্চায়িত হয় বিজয় বসন্ত যাত্রাপালা। যাত্রাপালা দেখতে নারী-পুরুষ ভিড় জমায়। মঞ্চায়িত যাত্রাপালায় অভিনয় করেন স্থানীয় শিল্পী মুকুল রহমান, রবিউল ইসলাম, বিশারত মিয়া, হালিম রহমান, অহিদ মিয়া, সুমন মিয়া, বকুল রহমানসহ অনেকই। তাছাড়াও মেহেরপুর থেকে মুক্তারানী, সাবিত্রী রায়, সাধীনতা রাই, পপি রাই, রেখা রাইসহ মাগুরা ও রাজবাড়ী থেকে অভিয়ন শিল্পী বজয় বসন্ত মঞ্চায়িত যাত্রাপালায় অভিয়ন করে।