স্টাফ রিপোর্টার: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগেরচতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাইমুল ইসলাম ওরফে রিয়াদকে কুপিয়ে খুন করেছে একদলদুর্বৃত্ত। গতকাল সোমবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনেএ ঘটনা ঘটে। যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুলইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে। গতকাল সন্ধ্যায় ইফতারেরপর দু পক্ষের সংঘর্ষ হযেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এর জেরে হত্যাকাণ্ডেরঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।
উদ্ভূতপরিস্থিতিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্যবন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রাত ৮টার মধ্যে ছাত্রদের এবং আজ সকাল ৯টারমধ্যে ছাত্রীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানকেবহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, দুপুরের দিকে নাইমুল বন্ধুবান্ধবদের সাথে গল্পকরছিলেন। এ সময় তিনটি মোটরসাইকেলে করে একদল দুর্বৃত্ত এসে নাইমুলকেএলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। নাইমুলের বন্ধু দেলোয়ার হামলাকারীদের হাত-পা জড়িয়েধরলে তার ওপরও চড়াও হয় দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে নাইমুল নিস্তেজ হয়ে পড়লেহামলাকারীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরতচিকিত্সকেরা নাইমুলকে মৃত ঘোষণা করেন।নাইমুলের বন্ধু রাতুল দাস সাংবাদিকদের বলেছেন, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে যশোরবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমহাসান নাইমুলকে হত্যার হুমকি দিয়ে ফোন করেন।নাইমুলের সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা জানায়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে কয়েক মাসধরে ঝামেলা চলছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও কয়েক মাসআগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সুব্রত বিশ্বাসকে সভাপতি ও শামীম হাসানকেসাধারণ সম্পাদক করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নাম ঘোষণা করে। এ কমিটির বিরুদ্ধেঅবস্থান নেয় সঞ্জয় ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন একটি অংশ। নাইমুল সঞ্জয়ব্যানার্জির অনুসারী ছিলেন। সর্বশেষ গতকাল ছাত্রলীগের ইফতার পার্টিতে সঞ্জয়ব্যানার্জির অনুসারীরা অংশ নেননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গতরাত থেকেই শামীমহাসানের অনুসারীরা মুঠোফোনে তাদের হুমকি দিতে থাকেন। ইফতার পার্টির পরসাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানের ভাগনে ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষেরছাত্র তানভীর চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাইমুলের বন্ধু বাদলকে মারধর করেন। এঘটনার পর নাইমুল তানভীরকে ডেকে পাঠান। অসন্তুষ্ট শামীম গতকাল সকালে কৈফিয়তচেয়ে নাইমুলকে ফোন করেন ও লাশ ফেলে দেয়ারহুমকি দেন।
এদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসান বলেছেন, তার বিরুদ্ধেওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি কাউকে হুমকি দেননি। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকেধ্বংস করে দেয়ার জন্য সুপরিকিল্পিতভাবে এমন একজনকে হত্যা করা হয়েছে যেঝাত্রলীগের সদস্যই নয়।নাইমুলের মৃতদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালমর্গে রয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি। ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি থমথমে।এদিকে জেলা ছাত্রলীগ এ ঘটনার পরপরই শহরে একটি মিছিল করে।