যক্ষ্মাবিষয়ক সাংবাদিকতায় ব্র্যাক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক কচি

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: সফুরা এখন মডেল স্বাস্থ্য সেবিকা শিরোনামে যক্ষ্মা বিষয়ক ফিচার লিখে ব্র্যাকের মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন সাংবাদিক রাজীব হাসান কচি। গত সোমবার  বেলা ১২টায় রাজধানীর মহাখালীস্থ ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০১২-১৩ সালের যক্ষ্মাবিষয়ক রিপোর্টিঙের ওপর ভিত্তি করে তিনটি প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমের ২৪জন সাংবাদিক এ পুরস্কার পান। নিজ নিজ ক্যাটাগরিতে সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে সমকাল, ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস ও চ্যানেল আই।

ব্র্যাকের ভাইস চেয়ারপারসন ড. আহমেদ মোশতাক রাজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. দীন মুহাম্মদ নূরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন নাটাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোজাফফর হোসেন পল্টু, ন্যাশনাল টিবি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর ড. মোহাম্মদ আশেক হোসেন। সভায় প্রধান অতিথি বলেন, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি সবাই সচেতন হয়ে যার যার ভূমিকা পালন করলে বাংলাদেশ অবশ্যই যক্ষ্মারোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত হবে।

ব্র্যাক কমিউনিকেশনস এবং অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জের প্রোগ্রাম হেড স্নিগ্ধা আলি এবং সিনিয়র অ্যাডভাইজার আফসান চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির পরিচালক ড. কাওছার আফসানা। তিনি বলেন, সারাদেশে যক্ষ্মারোগের মোকাবেলায় জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদকর্মীরা যে প্রশংসনীয় অবদান রাখেন তার স্বীকৃতি হিসেবেই ২০০৮ সালে এ অ্যাওয়ার্ডটি প্রবর্তন করেছে ব্র্যাক।

জুরি বোর্ডের প্রধান বার্তা সংস্থা এপির সাবেক ব্যুরো প্রধান ফরিদ হোসেন বলেন, এ পুরস্কার প্রবর্তনের পর থেকে পত্রপত্রিকায় যক্ষ্মাবিষয়ক রিপোর্টিং বেশি হচ্ছে এবং গুণগত মানও ভালো হচ্ছে। এটি অবশ্যই সুফল হিসেবে গণ্য হবে। প্রধান অতিথি ডা. দীন মুহাম্মদ নূরুল হক গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশংসা করে বলেন, মিডিয়ার কল্যাণে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ সহজতর হয়েছে। প্রমাণস্বরূপ বলা যায়, প্রত্যন্ত এলাকার অশিক্ষিত লোকেরাও ডায়রিয়া রোগীদের ওরাল স্যালাইন বানিয়ে খাওয়াতে পারে। এটা সম্ভব হয়েছে মিডিয়ার বদৌলতেই। তাই এদের পুরস্কৃত করায় ব্র্যাককে অভিনন্দন।

বিশেষ অতিথি মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, যক্ষ্মাবিরোধী আন্দোলনে এখন সরকারের সাথে কাজ করছে ব্র্যাকসহ ৪৪টি সংগঠন। এদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজ গ্রামাঞ্চলেও সবাই সচেতন। অহেতুক ভয় বা সংকোচের কারণে কেউ যক্ষ্মারোগ চাপিয়ে রাখে না, চিকিৎসা নিতে ছুটে আসে। ড. আশেক হোসেন বলেন, সারাদেশে এখন আট শতাধিক ডটস (ডিরেক্টলি অবজার্ভড ট্রিটমেন্ট শর্টকোর্স) সেন্টার রয়েছে। আর আছে ৪৪টি সংস্থার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। এত শক্তিশালী পার্টনারশিপ প্রোগ্রামই তো অন্য দেশের জন্য মডেল হতে পারে। এরপর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন ব্র্যাকের স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম।

চ্যানেল আই’র পক্ষে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, উন্নয়নপ্রচেষ্টা যে কেবল রাজধানীকেন্দ্রিক নয়, তার বড় প্রমাণ দিল ব্র্যাক জেলা-উপজেলা পর্যায়ের এতোজন সাংবাদিককে পুরস্কার দিয়ে। তার মতে দেশের প্রতিটি টিভি চ্যানেলেরই উচিত সামাজিক দায়িত্ব পালনে দৈনিক আরও কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখা।

ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করে এর উপসম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, অর্থনীতিকেন্দ্রিক পত্রিকা হওয়ায় আমরা স্বাস্থ্যবিষয়ক রিপোর্টিঙে অনেক সময় ইচ্ছে থাকলেও বেশি জায়গা দিতে পারি না। এর মধ্যেও যথাসাধ্য চেষ্টা করি, ভবিষ্যতেও এই চেষ্টা থাকবে। সমকালের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করে এর যুগ্ম সম্পাদক রাশিদ উন নবী বাবু বলেন, সমকাল বরাবরই সামাজিক দায়িত্ববোধের খবর প্রকাশের জন্য বেশি জায়গা বরাদ্দ রাখে। এ পুরস্কার আমাদের আরো উৎসাহিত করবে। সভাপতির ভাষণে ড. আহমেদ মোশতাক রাজা চৌধুরী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে গণমাধ্যমকর্মীরা সবসময়ই ব্র্যাককে পাশে পাবেন।