ময়নাতদন্তের পর লাশ নিয়ে পিতা ও স্বামীপক্ষের টানাটানি

 

ফলোআপ: আলমডাঙ্গা জোড়গাছার গৃহবধূ মাহিরনের মৃতদেহ তার পিতার গ্রাম রোয়াকুলিতে দাফন

ঘোলদাড়ী প্রতিনিধি: জোড়াগাছার গৃহবধূ মহিরন নেছা মরিয়মের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে তার পিতার গ্রাম রোয়কুলিতে দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্তের পর লাশ নিয়ে মহিরনের পিতা ও স্বামীপক্ষের লোকজনের মধ্যে টানা হেঁচড়া শুরু হয়।

মহিরনের স্বামীর হদিস মেলেনি। পুলিশ তাকে ধরতে নানামুখি তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। স্বামী আমিরুল ইসলাম আমির তার স্ত্রী মহিরনকে হত্যা করে তার পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় লাশ বস্তায় ভরে নিজেদের পায়খানার সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে ফেলে রাখে। লাশ ফেলে আমির আত্মগোপন করে। গ্রামে খবর রটে, স্বামী স্ত্রী দুজনই নিখোঁজ হয়েছে। মাহিরনের ভাই নাসির উদ্দীন আলমডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এর দু দিনের মাথায় গতপরশু রাত ৯টার দিকে তীব্র দুর্গন্ধে মাহিরনের লাশের সন্ধান মেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে ময়নাতদন্ন শেষে মহিরনের পিতার বাড়ি আলমডাঙ্গা রোয়াকুলি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে মহিরনের স্বামী জোড়গাছা গ্রামের আমির হোসেন ওরফে আমিরুল ঘটনার পর থেকে পালতক রয়েছে। নিহত মহিরনের ভাই নাসিরের দাবি, মাহিরনকে তার স্বামী শাশুড়ি ও ভাসুর মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখে।

পুলিশ গ্রামের একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানতে পেরেছে, আমিরুল নেশার টাকার জন্য তার স্ত্রীকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ তুলাতেন। ঋণ করে টাকা তার হাতে তুলে ন দিলে মহিরনকে নির্মমভাবে নির্যাতন করতেন তিনি। স্বামী একদিন মাদকমুক্ত হবে, একদিন সংসারে আসবে সুখ। এ আশায় মহিরন নীরবেই সহ্য করতো নির্যাতন। আনুমানিক ১৯ বছরের দাম্পত্য জীবনে দু সন্তানের জননী হন মাহিরন। বড় ছেলে ঢাকায় কাজ করে। ছোট ছেলে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে। বড় ছেলের পাঠানো কিছু টাকা নিয়েই মাহিরনের সাথে তার নেশাখোর স্বামীর ঝগড়া বাধে। এরই এক পর্যায়ে গত সোমবার হত্যা করা হয় মহিরনকে। লাশ গুমে সহযোগিতা করে মাহিরনের শাশুড়ি, ভাসুরসহ অন্যরা। পুলিশ এদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেলেও গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি।