ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে দুর্ব্যবহারের অপরাধে ডিবি পুলিশের এক কনস্টেবলের সাত দিনের কারাদণ্ড

 

মেহরপুর অফিস: মেহেরপুর আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমানের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কনস্টেবল আমিরুল মোমেনিকে সাত দিনের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার বিকলে আদালতে প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

জানাগেছে, মুজিবনগর উপজেলা জামায়াতের আমির ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জারজিস হোসাইন রোববার সকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। হরতাল-অবরোধের সময় মুজিবনগর গৌরিনগর এলাকায় পুলিশের ওপর হামলার মামলার আসামি ছিলেন তিনি। জারজিসকে গ্রেফতার করতে সকাল থেকে আদালত এলাকায় অবস্থান করছিলো ডিবি পুলিশের একটি দল। কিন্তু কৌশলে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন জারজিস হোসেন। দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে আদালতের কাজ শেষে বাস ভবনে যাওয়ার উদ্দেশে আদালত প্রাঙ্গণে একটি রিকশায় ওঠেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান। ডিবি কনস্টেবল আমিরুল মোমেনিন (কনস্টেবল নং ১৩৬) তাকে জামায়াত নেতা জারজিস বলে সন্দেহ করেন। ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমানের গতিরোধ করে পরিচয় জানতে চান।

আদালতের কয়েকজন কর্মচারী জানান, ওই পুলিশ কনস্টেবল ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এক পর্যায়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমানের নির্দেশে আমিরুলকে গ্রেফতার করেন আদালতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান নিজেই আদালত পরিচালনা করে আমিরুলের শাস্তি দেন। সরকারি কাজে বাধাদান ও অপরাধমূলক আক্রমণের অভিযোগ তুলে দণ্ডবিধির ৩৫২ ধারায় দোষি সাব্যস্ত করে আমিরুলকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন তিনি। আদালতের আদেশে ডিবি কনস্টেবল আমিরুলকে মেহেরপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ কনস্টেবল গ্রেফতারের খবর পেয়ে মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার শেখ ও সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল জলিলসহ পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ আদালতে ছুটে আছেন।

এদিকে জারজিস হোসাইনের জামিন আবেদনের প্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান তার জামিন মজ্ঞুর করেন। পরবর্তীতে ওই জামিন আদেশ বাতিল করে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা নির্দেশন দেন তিনি। তবে জামিন আবেদন বাতিলের সময়ে জারজিস হোসেন আদালতে ছিলেন না। তিনি জামিন আদেশ পেয়ে আগেই আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেছিলেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মেহেরপুর ডিবি ওসি আকতারুজ্জামান জানান, ভুল বোজাবুঝিতে এমনটি হয়েছে। আসলে জেএমবি ও জামায়াতের কয়েকজন সন্দেহভাজন আমাসিকে ধরতেই তারা আদালত এলাকায় অবস্থান করছিলো। কিন্তু ওই ঘটনা আসলেই দুঃখজনক।