মোমিনপুর স্টেশন প্লাটফর্মে ১৪৪ ধারা : পৃথক স্থানে দুপক্ষের প্রতিবাদ সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার: মোমিনপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে দুপক্ষের কোনো পক্ষই সমাবেশ করতে পারেনি। ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার ও গত নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শেফালী খাতুন পক্ষ পাল্টাপাল্টি সমাবেশ একই স্থানে আহ্বান করলে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধরা জারি করে। ফলে দুপক্ষই স্টেশন প্লাটফর্মের বদলে পৃথকস্থানে সমাবেশ করে। সমাবেশে দুপক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উত্থাপন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তির বিষয়টি স্পষ্ট করে তোলে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পূর্ব থেকেই বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দারের সাথে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেফালী খাতুনের বিরোধ চলে আসছে। নির্বাচনে গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার দলীয় মনোনয়ন না পেলেও তিনি পুননির্বাচিত হন। সেই থেকেই দলের অভ্যন্তরে নেতাকর্মীদের মধ্যে টান পড়ন রয়েছে। দ্বিধাবিভক্তি মাঝে মাঝেই নগ্ন হামলায়ও রূপ নেয়। এরই এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার ১১ আগস্ট বিকেল থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তিন দফা হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে অবশ্য দলীয় বা নির্বাচনী বিরোধের জের বলে মানতে নারাজ স্থানীয় পর্যবেক্ষকমহল। তারা বলেছে, এবারের বিরোধের নগ্ন প্রকাশ মূলত জমি নিয়ে বিরোধের। সেটা কেমন? স্থানীয়রা বলেছে, মোমিনপুরের সরিষাডাঙ্গার সালাম ও নীলমণিগঞ্জবাজারের মিলনের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ দানাবাধে। মিলন বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফারুকের ভাগ্নে। আর সালাম দিনের অধিকাংশ সময়ই থাকে শেফালী খাতুনের স্বামী নবীছদ্দিনের সাথে। বৃহস্পতিবার মিলনকে মারে সালাম। হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সরিষাডাঙ্গা ঈদগার নিকট সালামকে পেয়ে মারপিট করে। এ সময় সালামের সাথে ছিলেন নবীছদ্দিন। দুজনকেই আহত অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে নবীছদ্দিনের লোকজন পাল্টা হামলা চালিয়ে মিলনকে আহত করে। তাকেও হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর শেফালী খাতুন চেয়ারম্যান ফারুকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গতকাল মোমিনপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে দুপক্ষই প্রতিবাদসভা আহ্বান করে। বিকেলে একইস্থানে সভা আহ্বানের খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে উভয়পক্ষেরই প্রতিবাদ সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করা হয়। শেফালী খাতুন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ব্যনারে মোমিনপুর ফুটবল মাঠে ও গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার তার নিজ বাড়ির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। ফুটবল মাঠের প্রতিবাদ সভায় ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল ইসলাম বলেন, গোলাম ফারুক একজন চেয়ারম্যান। তিনি কীভাবে একজন সাধারণ মানুষকে মারেন? ইউনিয়নবাসীর বিচার করা উচিত। এ সমাবেশ থেকে গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। পক্ষান্তরে গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার তার বাড়ির সমানের সমাবেশে বলেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মনগড়া। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওরা ভোটে হেরে নানাভাবে নানা চক্রান্ত করে আমাকে আমার ইউনিয়নবাসীর সামনে খারাপ করতে চেয়েছে। উল্টো ওরাই খারাপ হয়েছে। কেনো না, আমার সাথে যেমন ইউনিয়নবাসী রয়েছে, তেমনই রয়েছে আমার প্রাণপ্রিয় দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ওরা আওয়ামী লীগের মুখোশ পরে চরম স্বেচ্ছাচারিতায় মেতেছে। দলীয়ভাবে ওদের শাস্তি হওয়া উচিত।