মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচন ॥ ১৩ কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী প্রায় ১৪শ ভোটে এগিয়ে

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা এগিয়ে রয়েছে ১ হাজার ৩৬৮ ভোটে। ১৩টি ভোটকেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। স্থগিত দুটি কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৫৬৩ জন। ওই কেন্দ্র দুটিতে পুনরায় নির্বাচনের পর জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন (নৌকা) পেয়েছেন ৯ হাজার ২০৯ ভোট। বিএনপি প্রার্থী পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ^াস (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৭ হাজার ৮৪১ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলহাজ মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু (নারকেল গাছ) ২ হাজার ৬৩২ ভোট পেয়েছেন। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিশান সাবের (মোবাইলফোন) পেয়েছেন ৫৭ ভোট। নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩০ হাজার ৯৬৫টি। ১৩টি কেন্দ্রে শতকরা ৮০ ভাগের ওপরে ভোট পোল হয়েছে।
মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল সোয়া ১০টার দিকে সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। ভোট শুরুর আগে রাতের আঁধারে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সবন্দি করার অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই দুটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ হবে বলে জানা গেছে। তবে নৌকা প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মাঝে জয়ের আনন্দ বিরাজ করছে। জেলা নির্বাচন অফিসার রোকনুজ্জামান বলেন, দুই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিতের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুনঃনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ১ নং ওয়ার্ডে মীর জাহাঙ্গীর আলম (পানির বোতল) এক হাজার ৫৮৬ ভোট পেয়ে কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম ফারুক উল মামুন লাকি (পাঞ্জাবি) ৯৯৯ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া রাজিব (টেবিল ল্যাম্প) ৪৮০ ভোট ও মোয়াজ্জেম হোসেন (উটপাখি) ১৫৩ ভোট পেয়েছেন।
২ নং ওয়ার্ডে আল মামুন (টেবিল ল্যাম্প) ৬৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইয়াছিন আলি শামীম (পানির বোতল) ৫১৮ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া মিজানুর রহমান জনি (পাঞ্জাবি) ৩৩৮ ভোট, আবু ওবাইদুল্লাহ সেন্টু (ব্লাক বোর্ড) ৪৬০ ভোট, ইমন বিশ্বাস (উটপাখি) ৬৭ ও আব্দুস সালাম (ডালিম) ২০৯ পেয়েছেন।
৩ নং ওয়ার্ডে সৈয়দ আবু আব্দুল্লাহ বাপ্পী (পানির বোতল) ৭২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাসিরুল ইসলাম (ডালিম) ৪০৮ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া মিয়ারুল ইসলাম (টেবিল ল্যাম্প) ৩৭৫ ভোট, ফিরোজ হোসেন (পাঞ্জাবি) ১৮ ভোট, জাহাঙ্গীর আলম (উটপাখি) ৩৫৬ ভোট, সেলিম রেজা কল্লোল (ব্লাকবোর্ড) ১৩৪ ভোট পেয়েছেন।
৪ নং ওয়ার্ডে শাকিল রাব্বী ইভান (ফাইল কেবিনেট) ৯৫৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি আব্দুর রহিম (স্ক্রু-ড্রাইভার) ৯২৬ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া মীর মাসুদ রানা (পানির বোতল) ১০৬ ভোট, আব্দুস সালাম (পাঞ্জাবি) ২৯১ ভোট, মোঃ রিয়াজউদ্দিন (ব্লাক বোর্ড) ৭৮৬ ভোট, আব্দুল হাদী (উটপাখি) ৮৮ ভোট, মহিবুল ইসলাম (ডালিম) ২৪৮ ভোট, মোঃ সিরাজুল (ব্রিজ) ৫৩ ভোট ও জিয়ারুল ইসলাম (টেবিল ল্যাম্প) ৩৫৬ ভোট পেয়েছেন।
৫ নং ওয়ার্ডে জাফর ইকবাল (উটপাখি) ৯০৪ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এসএম আবুল হাসানাত (পানির বোতল) পেয়েছেন ৬২৪ ভোট। এছাড়া রাজু আহমেদ (টেবিল ল্যাম্প) পেয়েছেন ১২১ ভোট, মোস্তাক আহমেদ (ব্রিজ) পেয়েছেন ২৬৮ ভোট, খায়রুল বাশার (ডালিম) ২৮১ ও মনিরুল ইসলাম (পাঞ্জাবি) ২১ ভোট পেয়েছেন।
৬ নং ওয়ার্ডে শাহিনুর রহমান (পাঞ্জাবি) ৮২৩ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দ মনজুরুল হাসান টুটুল (পানির বোতল) ৭৬৪ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া ইমতিয়াজ আহমেদ ইনতাজ (উট পাখি) ২৯২ ভোট ও সাঈদ মাহবুব জামান (টেবিল ল্যাম্প) ২৮ ভোট পেয়েছেন।
৮ নং ওয়ার্ডে সৈয়দ মনজুরুল কবীর রিপন (ডালিম) ৬৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুস সাত্তার মুক্তা (ব্রিজ) পেয়েছেন ৪০৭ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া  মোস্তাফিজুর রহমান (টেবিল ল্যাম্প) ১২২ ভোট, রিন্টু রহমান (উটপাখি) ৩২৪ ভোট, রিংকু (পাঞ্জাবি) ১৫৮ ভোট ও তৌহিদুল ইসলাম বাবলু (পানির বোতল) পেয়েছেন ২৯৫ ভোট।
৯ নং ওয়ার্ডে সোহেল রানা (পানির বোতল) ৯১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হামিদুল ইসলাম (টেবিল ল্যাম্প) পেয়েছেন ৮১৬ ভোট। এছাড়া নাজমুল হাসান (পাঞ্জাবি) ৬৫ ভোট ও রেহেনা খাতুন (উটপাখি) পেয়েছেন ১৪২ ভোট।
এদিকে নির্বাচনে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের মধ্যে ১ নং ওয়ার্ডে আলপনা খাতুন (জবা ফুল) ২ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দিল আফরোজ (বলপেন) এক হাজার ৮৪৪ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া নূরুননাহার (দ্বিতল বাস) ৭১৫ ভোট, সফুরা খাতুন (টেবিল ফোন) ২৭২ ভোট, আনজুরা খাতুন (অটোরিকশা) ২৯৮ ভোট, নারর্গিস সুলতানা (চশমা) ৭২৭ ভোট ও মনোয়ারা খাতুন (আনারস) ৯০৯ ভোট পেয়েছেন।
২ নং ওয়ার্ডে শিউলী আক্তার (অটোরিকশা) ২ হাজার ৫২২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাজমুন নাহার রিনা (চশমা) ২৪৮৯ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া শাহানারা খাতুন (আনারস) ৫২১ ভোট, পলি খাতুন (বলপেন) ৪৭০ ভোট, কাঞ্চনমালা (আংটি) ৮৮৭ ভোট  ও খাদিজা বেগম (জবা ফুল) ৪২২ ভোট পেয়েছেন।
এবং ৭ নং ওয়ার্ডের ভোট স্থাগিত হওয়ায় সংরক্ষিত ৩ নং ওয়ার্ডের হামিদা খাতুন (আনারস) ২ হাজার ৫৮৫ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। এছাড়া রোকসানা খাতুন (অটোরিকশা) এক হাজার ১৪৮ ভোট পেয়েছেন।
পরবর্তী নির্বাচন শেষে ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর এমনকি পৌর মেয়রের ভাগ্য নির্ধারণ হবে।