মেহেরপুর গাংনীর রাজাপুর মাঠে দুর্বৃত্তদের নৃশংসতা : কৃষক আবু বক্করকে জবাই করে খুন

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কোদাইলকাটি গ্রামের কৃষক আবু বক্করকে (৫৫) জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খলিশাকুণ্ডি বাজার থেকে ফেরার পথে রাজাপুর মাঠে তাকে খুন করা হয়। রাত একটার দিকে পরিবারের সন্ধানের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি কোদাইলকাটি গ্রামের মৃত হারান মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কৃষক আবু বক্কর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মরিচ বিক্রির জন্য গ্রামের পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিশাকুণ্ডি বাজারে যান। প্রতিদিনের ন্যায় সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যদের মাঝে উদ্বেগ দেখা দেয়। রাত বাড়ার সাথে সাথে তা আরো বাড়তে থাকে। অজানা বিপদের আশঙ্কায় আবু বক্করের পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। গ্রাম ছাড়িয়ে রাজাপুর এবং পরে খলিশাকুণ্ডি বাজারের যাওয়ার পথে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এক পর্যায়ে রাত একটার দিকে রাজাপুর মাঠ থেকে তার গলাকাটা লাশের সন্ধান পায়। খবর দেয়া হয় কুমারীডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পে। গাংনী থানার ওসি মাসুদুল আলমসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন।

স্থানীয়সূত্র আরো জানিয়েছে, মাথাভাঙ্গা নদী পার হয়ে খলিশাকুণ্ডি গ্রামের ভেতর দিয়ে বাজারে যাওয়া আসা করে রাজাপুর, কুমারীডাঙ্গা, কোদাইলকাটিসহ গাংনী উপজেলার ওই অঞ্চলের মানুষ। ওই পথে নদীর পার্শ্ববর্তী খলিশাকুণ্ডি গ্রামের জনৈক আজমত আলীর সেচ পাম্পের কাছ থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। সেচপাম্পের ড্রেনের কাছেই তাকে জবাই করে খুন করে দুর্বৃত্তরা। তবে কেন এ হত্যাকাণ্ড সে সম্পর্কে কোনো কিছুই ধারণা করতে পারছেন না পরিবার ও এলাকাবাসী। পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, একেবারেই সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন আবু বক্কর। মোষের গাড়িভাড়া ও কৃষিকাজই ছিলো তার প্রধান পেশা। সব সময়ই নিজের কাজে মগ্ন থাকতেন। কারও সাথে কোনো ঝামেলা কিংবা বিরোধ ছিলো না। ছিনতাইকারীচক্র তার সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার সময় তাদের চিনে ফেলায় এ হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে এমন ধারণাও করছেন এলাকার অনেকেই। তবে গত মাসে রাজাপুর গ্রামের মানুষের সাথে বিরোধ বাধে খলিশাকুণ্ডি গ্রামের কিছু মানুষের। এর জের ধরেই ওই পথ দিয়ে অনেকেই চলাফেরা বন্ধ করে দেন। এ ঘটনার জের ধরেও তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলেও ধারণা করছে এলাকাবাসী।

গাংনী থানার ওসি মাসুদুল আলম জানিয়েছেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। হত্যার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশে জানানো হয়েছে তার সাথে কারও বড় ধরনের কোনো বিরোধ বা দ্বন্দ্ব ছিলো না। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডের তেমন কোনো আলামতও উদ্ধার হয়নি। তবে দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানালেন তিনি।