মেহেরপুর গাংনীর কুতুবপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষক মণ্ডলীর কাণ্ড : ফিল্মি স্টাইলে প্রধান শিক্ষককে জিম্মি করে চেক স্বাক্ষরের চেষ্টা!

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কুতুবপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজে শাখার শিক্ষক মণ্ডলী প্রতিষ্ঠানটিতে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, তারা ফিল্মি স্টাইলে প্রধান শিক্ষককে জিম্মি করে চেক স্বাক্ষরের চেষ্টা ব্যর্থ হন। ঘন্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রাখা হয় প্রধান শিক্ষককে। এ ঘটনায় স্কুল ও কলেজ শাখার শিক্ষকের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও এলাকায় বিরাজ করছে ক্ষোভ। নিয়ম বর্হিভূতভাবে বেতনের দাবিতে গতকাল শনিবার সকালে ওই তাণ্ডব চালায় বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার গাড়াবাড়িয়ায় অবস্থিত কুতুবপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার শিক্ষক কর্মচারীরা গতকাল সকালে আকস্মিক লাঠিসোটা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হামলা চালায়। শিক্ষক রেজাউর রহমান, মাহফুজুর রহমান জুহিন ও রুবেল হোসেনসহ বহিরাগত আরো কিছু যুবক কক্ষের চেয়ার, ফুলের টব, টেবিলের গ্লাসসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। প্রধান শিক্ষক সুন্নত আলীকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক একটি চেক পাতায় স্বাক্ষর করানোর অপচেষ্টা করে। বেশ কিছুক্ষণ ধরেই ফিল্মি স্টাইলে চলে তাণ্ডব। প্রধান শিক্ষক কোনো কিছু বোঝার আগেই সহকর্মী সন্তানতুল্য শিক্ষকদের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। তারা চেকের পাতায় স্বাক্ষর করাতে ব্যর্থ হলে প্রধান শিক্ষককে তার কক্ষে তালাবন্দ করে রাখেন। এ ঘটনায় স্কুল শাখার শিক্ষকরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পরে পুলিশ প্রহরায় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে নিরাপদে পৌঁছান। শিক্ষকদের এই কর্মকাণ্ডকে জঘন্য আখ্যায়িত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দায়ী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউএনও।

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সুন্নত আলী জানান, কলেজ শাখা অনুমোদনের পর ১৬ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ হয়। এদের মধ্যে তিনজনের নিবন্ধন রয়েছে। এমপিওভূক্তি তো দুরে থাকা বাকি কোনো শিক্ষকের নিবন্ধনই নেই। তবে প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুসারে তাদের যতোদুর সম্ভব পারিশ্রমিক দেয়া হয়। কিন্তু তাদের অযৌক্তিক দাবি যে, স্কুল শাখার শিক্ষকদের মতোই বেতন দিতে হবে। এটি কীভাবে সম্ভব? স্কুলের শিক্ষকরা ৯-৫টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। কলেজ শাখার শিক্ষকরা দুয়েক ঘন্টা দায়িত্ব পালন করেন। কলেজ শাখার আয় তারা নিজেরাই নিয়ে নেয়। শিক্ষকরা যা করেছেন তা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ বিষয়ে তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান। অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ভাঙচুরকারী শিক্ষকদের মধ্যে রেজাউর রহমান মোবাইলফোন রিসিভ করেননি। তবে অপর শিক্ষক মাহফুজুর রহমান জুহিন বলেন, কিছুটা ভাঙচুর করা হয়েছে। আপনি কলেজে আসেন বিস্তারিত কথা হবে। তবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান। একই কথা জানালেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাসার।