মেহেরপুরে ধর্ষণ মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় ধর্ষক দারিয়াপুর গ্রামের টোকন (৩০) ও ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর নানি রহিমা খাতুনকে (৬০) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. রবিউল হাসান ওই রায় প্রদান করেন। একই সাথে ধর্ষক টোকনকে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড ও স্কুলছাত্রীর নানিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন বিজ্ঞ আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত টোকন মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে ও তাকে সহযোগিতা প্রদানকারী ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর নানি রহিমা খাতুন মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের তছলিমের স্ত্রী।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল সন্ধ্যায় মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তার নানি রহিমা খাতুন দারিয়াপুর বাজার থেকে গামছা কেনার কথা বলে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় দারিয়াপুর গ্রামের টোকনের বাড়িতে। ওই সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় নানি রহিমা খাতুন স্কুলছাত্রী ও যুবক টোকনকে এক ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন এবং পাহারা দিতে থাকেন। ওই সময় টোকন জোরপূর্বক মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে এবং ধর্ষিতার পিতাকে খবর দেয়। ধর্ষিতার পিতা রক্তাক্ত অবস্থায় তার মেয়েকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন সকালে ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। ২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় ওই দুজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করে। ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিকেলে ওই রায় প্রদান করেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক।

মামলায় সরকারপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাড. পল্লব ভট্টাচার্য এবং আসামিপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন অ্যাড. এসএম ইব্রাহিম শাহীন ও মো. শহিদুল ইসলাম।