মেহেরপুরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কৃষি বিপণন কেন্দ্র অকেজো

মাজেদুল হক মানিক: আছে অবকাঠোমো, নেই কোনো ক্রেতা-বিক্রেতা। এভাবেই পড়ে আছে মেহেরপুরের ৬টি কৃষি পণ্য সংগ্রহ ও বিপণন কেন্দ্র। প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারিভাবে কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। কৃষক উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রগুলো নির্মাণ হলেও প্রায় তিন বছরের মধ্যে তা চালু হয়নি।
কৃষি অফিসসূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় শস্য বহুমুখীকরণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালে জেলা মার্কেটিং বিভাগ ১টি এবং কৃষি বিভাগ আরও ৫টি কৃষি পণ্য সংগ্রহ ও বিপণন কেন্দ্র নির্মাণ করে। বাৎসরিক ভাড়া প্রদানের চুক্তিতে স্থানীয়রা কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জমি প্রদান করেন। সেখানে সরকারি অর্থে একটি টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। কৃষক উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকার ফসল সরাসরি ওই কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। কেন্দ্রের মাধ্যমে পাইকারী ব্যবসায়ীরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করবেন। কিন্তু কেন্দ্র নির্মাণের তিন বছর পার হলেও মার্কেটগুলো এখনও চালু করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট দফতর। ফলে অধরায় থেকে যাচ্ছে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি।
সদর উপজেলার আলমপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, ফসলের নায্যমূল্য পাওয়ার জন্য গ্রামে একটি বিপণন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোলাহলে মুখরিত থাকার কথা। সেই স্থানটি পড়ে আছে জনমানব শূন্য। এভাবে অব্যবহৃত পড়ে থাকলে অবকাঠামো বিনষ্ট হবে।
জেলা মার্কেটিং অফিসার জিবরাইল হোসেন বলেন, কেন্দ্রটি নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মার্কেটিং বিভাগের ১টি এবং কৃষি বিভাগের ৫টি বিপণন কেন্দ্র নির্মাণ হলেও কাক্সিক্ষত সুফল পাচ্ছেন না কৃষকরা। মাসিক ২ হাজার টাকা ভাড়ায় কৃষকদের কাছ থেকে ৮ শতাংশ জমি নিয়ে বিপণন কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। চালু না হওয়ায় জমি মালিকরা ভাড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি বিদ্যুত বিলও পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। তাই কেন্দ্রগুলো দ্রুত চালু করতে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, মেহেরপুর জেলায় সব ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। বিশেষ করে সবজি ও খাদ্য ফসলের জন্য জেলার জুড়ি নেই। কৃষকরা যদি বিপণন কেন্দ্রে সরাসরি পণ্য বিক্রি করতে পারেন তাহলে বাড়তি লাভ পাবেন। এ লক্ষ্য নিয়ে কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অচিরেই কেন্দ্রগুলো চালু হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
কৃষি অফিসসূত্রে আরও জানা গেছে, কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২য় শস্য বহুমুখীকরণ প্রকল্পের আওতায় মেহেরপুরসহ দেশের ২৭টি জেলার ৫২টি উপজেলায় ১০৪টি কৃষি বিপণন কেন্দ্র গড়ে তোলে কৃষি বিভাগ ও জেলা মার্কেটিং বিভাগ।